আদালত এদিন নির্দেশ দিয়েছে, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, যাঁদের বেআইনিভাবে শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের সরিয়ে সেখানে যোগ্য বঞ্চিতদের মধ্যে থেকে নতুন প্রার্থীকে নিয়োগ করতে হবে। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেই উঠে এসেছিল ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থাটির প্রসঙ্গ। এদিন বিচারপতি সিনহার এজলাসে ইডির তরফে জানানো হয়, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই কোম্পানির সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১০ অক্টোবর, অর্থাৎ মঙ্গলবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে বলেছিল।
এদিন সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন সেই নথির হার্ড কপি তদন্তকারী এজেন্সির কাছে জমা পড়েনি বলে ইডির তরফে জানানো হয়। যদিও ইডির কৌঁসুলি আরও জানান, ইমেলে কোনও নথি জমা পড়েছে কি না, তা পরে বলা যাবে। বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, এদিনের মধ্যে যদি নথি জমা না-পড়ে, তাহলে বিচারপতি সৌমেন সেনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী ইডি পদক্ষেপ করতে পারবে।
এদিন এই মামলায় যুক্ত কিছু বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীর পক্ষে আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতে জানান, যে ৯৬ জন প্রার্থীর নিয়োগ বেআইনিভাবে হয়েছে বলে সিবিআই এর আগে আদালতে জানিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৯৫ জন হাজির হয়েছিলেন পর্ষদের অফিসে। তাঁদের মধ্যে আবার ৯৪ জন প্রাথমিকের টেটে উত্তীর্ণ হওয়ার কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি।
২০১৪-এর টেটেও তাঁরা উত্তীর্ণ হননি। এঁদের চাকরি অবিলম্বে বাতিলের আবেদন করেন আইনজীবী। পর্ষদও জানায়, সবদিক খতিয়ে দেখে এঁদের বেআইনি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বলে আদালতে আগেই জানানো হয়েছে। তারপরেই বিচারপতি সিনহা তাঁদের সরিয়ে যোগ্য বঞ্চিতদের ওই সব পদে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। মেরিট অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে পর্ষদকে। পাশাপাশি ২০১৬ সালের প্যানেলও প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে।
বিকাশ ভবন সূত্রের দাবি, এর আগেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে ২০১৬-১৭ সালের নিয়োগের সব প্রার্থীর ব্রেক-আপ স্কোর প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০২০-এর ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে মেরিট লিস্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে। আদালত এদিন পর্ষদকে বলেছে, রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে কত শূন্যপদ রয়েছে, তার তালিকা দিতে হবে। তরুণজ্যোতির দাবি, ২০১৬-এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শূন্যপদের থেকে ৯০০ জনের বেশি নিয়োগ করেছিল পর্ষদ।
বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবার আদালতে আর্জি জানান, বোর্ড এখনও পর্যন্ত কতজনকে বেআইনি নিয়োগ করেছে, তা বিস্তারিত ভাবে রিপোর্ট দিয়ে জানাক। ৩০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।