প্রায় ২০০ বছরের বেশি প্রাচীন ঘোষবাড়ির পারিবারিক দুর্গাপুজো। অষ্টধাতু দিয়ে তৈরি দেবী মূর্তি মহাধুমধামে পূজিত হয় এই ঘোষ বাড়িতে। তবে প্রথমে এই পরিবারের দেবী মূর্তি অষ্ট ধাতুর ছিল না। সোনায় তৈরি মার্তৃ মূর্তি পুজো করা হতো। পরবর্তী সময়ে সোনার সেই মূর্তি চুরি হয়ে যাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে অষ্টধাতুর মূর্তি তৈরি করা হয়।
লোকশ্রুতি আছে অতীতে একটা সময় বাঙালপুরের সিংহবাহিনী তলায় প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বিশাল ঠাকুর দালান ছিল। সেখানেই সোনার দুর্গা প্রতিমার নিত্য পুজো করতেন ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। যদিও পরবর্তী সময়ে দস্যুদের আক্রমনে ঠাকুরদালান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, চুরি হয়ে যায় সোনার মূর্তিও। ১২৫৪ সালে চুনীলাল বক্সি ঘোষ নতুন করে ঠাকুরদালান তৈরি করে সেখানে অষ্টধাতুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু করেন নিত্য পুজো। তবে অষ্ট ধাতুর দেবী প্রতিমার নিরাপত্তার কারণে ১৩৩৫ সালে বিপিন বিহারী ঘোষ বাড়ির মধ্যেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করে সেখানেই পুজো শুরু করেন। সেই তখন থেকে এভাবেই পূজিত হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা।
ঘোষ পরিবারের সদস্য বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘ষষ্ঠীর দিন দেবী মূর্তি পরিষ্কার করা হয়। তারপরই দেবী মাকে নতুন শাড়ি ও সোনার গয়না পরানো হয়। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মা সিংহবাহিনীর বোধন শুরু হয়। সপ্তমীর দিন সকালে পালকিতে চাপিয়ে দেবীকে সামনের ঠাকুরদালানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চারদিন ধরে ধুমধাম করে পুজো চলে।’
বিপ্লববাবু আরও বলেন, ‘আগে আমাদের বাড়ি পুজোয় বলি প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে এই প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দশমীর দিন সকালে পুজোর শেষ হয়। পুনরায় পালকিতে চাপিয়ে দেবী মাক বাড়ির ভিতরে নিত্য পুজোর জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে কলা বউ ও দেবী ঘট বির্সজন দিয়ে ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজো শেষ হয়।’
বাছাই করা সেরা খবর, দেশ-দুনিয়ার হালচাল এখন এক ক্লিকে। এই সময় ডিজিটালের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল জয়েন করতে ক্লিক করুন।