অনলাইন ওয়ালেটের মাধ্যমে অথবা তুলনামূলক ভাবে ছোট অঙ্কের পেমেন্টের জন্য আমার-আপনার মতো অনেকেই নির্ভর করি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের উপর। আবার হাজার দুয়েক টাকার কেনাকাটার জন্য তো কার্ড সোয়াইপ করারও প্রয়োজন নেই। কারণ, এখনকার ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডগুলিতে যে চিপ বসানো থাকছে, তাতে অন্তত দু’হাজার টাকার মতো ছোট অঙ্কের কেনাকাটার ক্ষেত্রে সোয়াইপ না-করে শুধুমাত্র স্ক্যানারের সামনে ধরলেই হবে, পিনও দিতে হবে না।
তাহলেই আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট হয়ে যাবে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রক্রিয়াটা চালু করা হয়েছিল গ্রাহকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই। ছোট ছোট আর্থিক লেনদেনের জন্য কার্ড সোয়াইপ করতে হলে যদি সংশ্লিষ্ট সোয়াইপিং মেশিনে কার্ডের তথ্য গ্রাহকের অজান্তে ক্লোন করে ফেলা হয়, তাহলে তো চিচিং ফাঁক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
তাই শুরু হয় আরএফআইডি (রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন) বেসড কার্ডের ব্যবহার, যাতে ছোট অঙ্কের লেনদেনের ক্ষেত্রে কার্ড সোয়াইপও করতে হবে না। তবে এখানেও যে বিপদ অপেক্ষা করছে। কারণ, এই ধরনের কার্ডের ক্ষেত্রে চিপের মধ্যে গ্রাহকের যে সব তথ্য দেওয়া থাকে, সেটা যে আরএফআইডি স্ক্যানার ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকেই কপি করে ফেলা যায়।
আর এই স্ক্যানার কিনতে পাওয়া যায় যে কোনও ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটের দোকানে। ফলে ধরা যাক, আপনি কোনও শপিং মল বা পুজো প্যান্ডেলে শপিং বা হপিংয়ে ব্যস্ত। আপনার ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড রয়েছে আপনার পকেটে বা পার্সে। কিন্তু প্রতারকরা খুব কৌশলে আরএফআইডি স্ক্যানারের মাধ্যমে আপনার কার্ডের ডেটা দূর থেকে কপি করে ফেলতে পারে। তারপরে সেই ডেটা বিক্রি হয়ে যেতে পারে ডার্ক ওয়েবে।
এরপর সেই ডেটা ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে প্রতারকরা। হতে পারে একলপ্তে খুব বেশি অঙ্কের টাকা তুলতে পারবে না প্রতারকরা, তবে বার বার টাকা হাতিয়ে নিয়ে আপনাকে পথে বসাতে পারে। তাই আপনার ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডটি পার্সে রাখলেও দেখে নিন সেটি আরএফআইডি প্রোটেকশন এনাবেলড কি না, অথবা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে কার্ডটিকে মুড়ে রাখুন পার্সে। তাহলে দূর থেকে কার্ডের ডেটা চুরির সম্ভাবনা কম।
