ভেজাল ছাড়া খাঁটি জিনিস মিলবে নাকো চেষ্টায়।
ভেজাল তেল আর ভেজাল চাল, ভেজাল ঘি আর ময়দা…’
সেই কবে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখে গিয়েছেন। তারপর ভাগাড়কাণ্ডের মতো ঘটনা। সেই ঘটনার ৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, গঙ্গা-শিলাবতী হয়ে কত জল বয়ে গিয়েছে। তবু সেই ট্রাডিশন চলছেই।
একাধিকবার ব্যবহার করা তেল, বাসি রুটি, মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া নানান খাদ্যসামগ্রী মজুত রেস্তরাঁর কিচেনে। কিছু জিনিস ফেলতে গিয়েই দুর্গন্ধে ভরে গেল গোটা এলাকা। পুজোর আগে ঘাটালের বিভিন্ন রেস্তরাঁ সহ মিষ্টির দোকানে অভিযান চালাতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক, মহকুমা শাসক সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সতর্ক করা হল রেস্তরাঁ মালিকদের। করা হল নমুনা সংগ্রহও। লাগাতার অভিযানের কথা বলা হলেও কেন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না তাও প্রশ্ন উঠল।
ঠিক কী ঘটেছে?
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন রেস্তরাঁ ও মিষ্টির দোকানগুলিতে খাবারের গুণগতমান সঠিক রাখতে অভিযান চালালেন খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক, ঘাটালের মহকুমা শাসক ও পুলিশ প্রশাসন। এদিনের অভিযানে বিভিন্ন রেস্তরাঁ ও মিষ্টির দোকান থেকে উদ্ধার হল প্রচুর পরিমাণ পচা খাবার। রেস্তরাঁ ও মিষ্টি দোকানের মালিক ও কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল। কিন্তু, তারপরেও শহরবাসীর প্রশ্ন, এই অভিযান বার বার হওয়ার পরেও কেন এই প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না। অভিযোগ, নজরদারির অভাব, কড়া পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এই ‘অপরাধ’ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
কী বলছে প্রশাসন?
ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘কিছু দোকানে আমরা আজ অভিযান চালিয়েছি। বেশ কিছু খারাপ জিনিস আমাদের চোখে পড়েছে। অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ফুড প্রডাক্ট রেখে দিচ্ছেন, কেউ বাসি খাবার মজুত করছেন। আমরা সতর্ক করেছি, কেউ চাইলে আমাদের অভিযোগ জানাতে পারেন। কিন্তু এই জিনিস একেবারেই মানা হবে না। পুজোতে এ ধরনের জিনিস কোনওভাবেই যাতে না ঘটে তা আমরা দেখছি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ফুড সেফটি নিয়ে গাফিলতি কার?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মানছেন, নজরদারি কমলেই ছানা থেকে মিষ্টি, দুধ, হোটেল রেস্তরাঁর খাবারে ভেজাল মেশানো বেড়েছে বলেই অভিযোগ। কোথাও গোটা দুধটাই তৈরি হচ্ছে কেমিক্যাল দিয়ে, কোথাও দুধের পরিমাণ বাড়াতে কেমিক্যাল থেকে সস্তার মিল্ক পাউডার ব্যবহার হচ্ছে বলেও অভিযোগ। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (৩) এই বিষয়ে নোডাল অফিসার হয়ে থাকে। গোটা বিষয়টিই নজরদারি চালায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি ব্লকে থাকেন ফুড সেফটি অফিসারেরা। কলকাতার ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধক শাখা এই কাজ তদারকি করে। সম্প্রতি গোটা রাজ্যেই অভিযান বাড়াতে ধরা পড়ছে একের পর এক অনিয়মের ছবি।
আপনার শহরের এরকম নানান খবর জানতে অবশ্যই ফলো করুন এই সময় ডিজিটালের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল।