পুজো শুরুর গল্প
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গে রাজা রাম চন্দ্র সেনের বাবার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। রামচন্দ্র সেনের বাবা কৃষ্ণরাম ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মন্ত্রী।তাকে বন্দি বানান কৃষ্ণচন্দ্র । বাবাকে বন্দি থেকে মুক্ত করতে ছুটে যান দিল্লি ও বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে। রাজা রামচন্দ্র দিল্লির সম্রাট মহম্মদ শাহের কাছে নিজের যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হন। পরবর্তীকালে বাবাকে মুক্তি ও রায় রায়ান উপাধি পান।পরবর্তীকালের বলাগড়ের সোমড়াতে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। এখানেই তৈরি হয় দারুকাঠের দুর্গা মন্দির ও বসতবাড়ি। পরবর্তীকালে বর্গী আক্রমণে নষ্ট হয় মন্দির। পরে ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয় স্থায়ী মন্দির। সেন বাড়ির সপ্তম প্রজন্ম রঞ্জন কুমার সেন বলেন, তৎকালীন সময়ে জানা যায় স্বপ্ন দেশে ত্রিভুজাদেবী আবির্ভূত হয়েছিলেন। আর সেই থেকেই এই বাড়িতেই চলে আসছে এক চালার মা দুর্গার পুজো।
ত্রিভূজা দুর্গা আরাধনা
কথিত আছে মানুষের রজ,তম, গুণের জন্যই মায়ের তিন হাত। আবার কেউ বলেন সুষমা, ইরা, পিঙ্গলা নাড়ির জন্যই মায়ের এই ত্রিভুজা রূপ। যদিও শাস্ত্র মতে মা দুর্গার দশভূজা রূপ বর্ণনা করা আছে। সেই কারণে মা দুর্গার পিছনে বাঁদিকে তিন হাত, ডানদিকে রয়েছে ছোট চার হাত । সেটি কাপড় এবং চুলে আবৃত। মায়ের বাঁ দিকের দুটি হাতে এক হাতে খড়গ ও এক হাতে ত্রিশূল। ডানদিকের এক হাতে সর্প ও মহিষাসুরের কেশ ধরে রয়েছেন। এক চালার মধ্যেই অধিষ্ঠান করছেন লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক ও সরস্বতী।
বাঁশের দোলায় বিসর্জন
ষষ্ঠীর দিন সেন পরিবারের মহিলারা মাকে বরণ করে ঘরে তোলেন এবং বিসর্জনের দিন বেদীতেই বরণ করে বিদায় জানান। অতীতে ছাগ ও মোষ বলির প্রচলন ছিল কিন্তু কালক্রমে ছাঁচি কুমড়ো ও ফল বলির রীতি রয়েছে পুজোর চার দিন। এছাড়া প্রতিবছরই মা দুর্গাকে গঙ্গায় বাঁশের দোলায় বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেই বাঁশেই পরের বছর জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোয় কাঠামো তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এই যোগসূত্রেই প্রতিবছর পুজো করে আসে সেন পরিবার। । আজও সেন বাড়িতে পুজোর কটা দিন দেশ-বিদেশ থেকে আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। একসঙ্গে পুজোর চার দিন চলে খাওয়া-দাওয়া।
Eisamay News App: আশপাশের তাজা ও গুরুত্বপূর্ণ খবর বাংলায় পড়তে ডাউনলোড করুন এই সময় অ্যাপ
Get all the latest news on Durgotsav 2021, মহালয়া , Bodhon, Durga Puja in Bengal, বোধন , mahashtami celebration and much more from Eisamay.