Durga Puja Carnival: কার্নিভ্যালে অংশগ্রহণে ‘অনীহা’! বিসর্জনের শোভাযাত্রায় পুজো কমিটির সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন, কটাক্ষ বিরোধীদের – durga puja carnival east medinipur participation decreased to half compared last year


বাঙলির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। সেই উৎসবকে ঘিরে শহর থেকে জেলায় মণ্ডপ ও প্রতিমায় থিমের লড়াই। এবার সেই থিমের প্রতিমা নিয়ে জেলায় জেলায় পুজো কার্নিভ্যাল। ইউনেস্কো স্বীকৃতি লাভ করায় শহর কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় পুজো কার্নিভ্যালের নির্দেশ রাজ্য সকারের। গতবছর থেকে জেলায় পুজো কার্নিভ্যাল শুরু হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কার্নিভ্যালের প্রস্তুতি চললেও প্রশাসনিক এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে বেশ খানিকটাই অনীহা জেলার কিছু পুজো উদ্যোক্তাদের বলে অভিযোগ। কারওর পুজোর থিম যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’, ‘কথাকলি’ তো আবার কারওর পুজোর থিম ‘অকালবোধন’। অভিযোগ, মূলত, বড় বড় প্রতিমাগুলিকে নির্দিষ্ট কার্নিভ্যালের স্থানে নিয়ে আসতে বিপুল খরচের জন্যই সেই অনুষ্ঠানে যোগদানে অনীহা প্রকাশ করেছে জেলার অধিকাংশ পুজো কমিটিগুলি।

রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ও তাম্রলিপ্ত পুরসভার সহযোগিতায় শুক্রবার বিকেল ৫টায় শহরের পুরানো জেলাশাসকের দপ্তর অর্থাৎ তমলুক মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কিছু দুর্গা প্রতিমা প্রদর্শন-সহ কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় চলতি বছরে মোট দুর্গাপুজো কমিটির সংখ্যা সরকারিভাবে প্রায় ১৬০০। যার মধ্যে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়েছে ১২১২টি পূজো কমিটিকে। তাম্রলিপ্ত পুরসভার অন্তর্গত এমন পুজোর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪২টি। অথচ সেক্ষেত্রে জেলার এই কার্নিভালে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে এখনও অবধি জেলার মাত্র ১৭টি ক্লাব বা সংস্থা আবেদন জানিয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই প্রশাসনিক এই কার্নিভ্যালের অংশগ্রহণে সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এবিষয়ে অতিরিক্ত খরচকেই দায়ী করছেন অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তারা। তার উপর রাস্তায় ওভারহেড গেট থাকায় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুজো শুরুর আগে আগে পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তার উপর ওভারহেড গেট খুলে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হলেও তা খোলা হয়নি। পুজো শেষ হয়ে গেলেও তা রাস্তা দখল করে রয়েছে।

হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে কার্নিভ্যাল দেখার জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রায় ৩০ জন শিল্পীর হাতের তুলির টানে তমলুকের হাসপাতাল মোড় থেকে নিমতলা অবধি প্রায় দীর্ঘ ২ কিলোমিটার পথ জুড়ে সুদৃশ্য আলপনা আঁকা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তমলুক, পাঁশকুড়া, মহিষাদল, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর- সহ জেলার আবেদনকারী প্রায় ১৭টি পুজো কমিটির তালিকায় রয়েছে নন্দকুমারের এনসিসি দুর্গাপুজো কমিটি, জয়রামবাটি সংঘর্ষি ক্লাব, তমলুকের খামারচকের ওলাবিবি দুর্গোৎসব কমিটি, আদি তাম্রলিপ্ত সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, ইউথ স্পোর্টিং ক্লাব, আমরা সবাই ক্লাব সৈয়দপুর, স্টিমারঘাট পল্লি ব্রাইট ফিউচার, নারী প্রগতি রেগুলেটেড মার্কেট দুর্গোৎসব কমিটি, আমরা সবাই ক্লাব ষোলোফুকার, ডিমারি সর্বজনীন শারদ উৎসব, চৌরাস্তা শক্তি সংঘ মহিষদা, নরঘাট সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি, চন্ডিপুরের বিদ্যাসাগর ময়দান দুর্গোৎসব কমিটি, বোনপুকুর স্কয়ার, মহিষাদলের স্পোর্টিং ক্লাব, পাঁশকুড়ার চিলড্রেন পার্ক আমারা সবাই ও মধুসুদন বার সংগ্রামী সাথী।

তবে এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক দপ্তরের আধিকারিক মহুয়া মল্লিক জানিয়েছেন, ‘জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক দপ্তর, পুলিশ প্রশাসন ও তমলুক পুরসভার সহযোগিতায় মহকুমা দপ্তরের সামনে ডিস্ট্রিক্ট এই কার্নিভালে অংশ নিতে এপর্যন্ত মোট ১৭টি পুজো কমিটি আবেদন জানালেও পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও বেশ কয়েকটি কমিটি অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’ কিন্তু, ঠাকুর নিয়ে কার্নিভ্যালে যোগ দেওয়ার খরচের কথা ভেবেই পিছিয়ে এসেছে অনেকেই। বিশেষ করে তমলুক থেকে দূরত্ব আছে এমন কোনও পুজো কমিটি আসছে না। তালিকায় নেই খেজুরি, নন্দীগ্রাম, পটাশপুর, ভগবানপুর, দিঘা এমনকি কাঁথির কোনও বড় পুজো। মূলত তমলুক লাগোয়া অধিকাংশ এবং পাঁশকুড়ার দু একটি পূজো কমিটি অংশ নেবে। তবুও কার্নিভাল ঘিরে জেলার সদর শহরে উৎসাহ তুঙ্গে।

Durga Puja Carnival : ‘রঙিন’ কার্নিভ্যাল কলকাতার কাছে! এক ছাতার তলায় একাধিক নামী পুজো
গতবছর ৩৫ টির মতো পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করলেও এবারে সেই সংখ্যা অর্ধেকে এসে পৌঁছেছে। কার্নিভ্যালে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তারা বলছেন, বাংলার সংস্কৃতি বিকশিত হোক। কিন্তু বাংলার সংস্কৃতিকে নিয়ে রাজনীতি মেনে নিচ্ছে না অনেকেই। পুজো উদ্যোক্তাদের ভাতা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করেছে সরকার। তার পরেও সরকারের আয়োজিত কার্নিভ্যালে অংশ নিয়ে চাইছে না পুজো উদ্যোক্তারা। এমন বেশ কিছু ক্লাব রয়েছে তার মাথায় বিধায়ক বা শাসকদলের নেতৃত্বরা রয়েছে তারাও কার্নিভ্যালে অংশগ্রহণ করছে না। এর দ্বারা প্রমাণ হয় জোর করে কিছু করতে চাইলে যা ফল হয় তাই হয়েছে। উল্লেখ্য, নন্দীগ্রাম বিধানসভার মধ্যে ৪৮টি দুর্গাপুজোর মধ্যে একটি দুর্গাপুজো ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্নিভ্যালে অংশ নিচ্ছে না সেই পুজোও। ফলে এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে আক্রমণে বিরোধীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *