টেনহরির লক্ষ্মীপুজোর মূল আকর্ষণ হল লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে মেলা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার এক বাসিন্দা সুধন্যচন্দ্র দাস আজ থেকে আনুমানিক ৭০ বছর আগে এই প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় লক্ষ্মীপুজোর সূচনা করেছিলেন। তিনি ওপার বাংলায় ঢাকা জেলার সমরসিং এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। সেখানেও বড় করে পুজোর আয়োজন হতো। এদেশে আসার পর এই এলাকায় ভালো ফলন ও এলাকার প্রতিটি গরীব মানুষের ঘরে যাতে সম্পদ আসে, সেই কামনায় লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করেছিলেন তিনি।এখানে লক্ষ্মী মায়ের সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারায়ণেরও পুজো করা হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণের পাশে জয়া ও বিজয়ার উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।রায়গঞ্জ ব্লকের বর্ধিষ্ণু গ্রাম টেনহরির পুজো এতটাই খ্যাতি অর্জন করেছে যে, শুধু রায়গঞ্জ শহর নয়, মালদহ থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর, এমনকি পাশের রাজ্য বিহারেরও প্রচুর মানুষ এখানে প্রতিবছরই লক্ষ্মীপুজোর উৎসব দেখতে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জীবনকৃষ্ণ দাস জানিয়েছেন, “একসময় ওই এলাকায় ফসল ঠিকমতো হতো না। তবে মা লক্ষ্মীর আরাধনার পর মা লক্ষ্মীর কৃপায় ওই এলাকায় প্রতিবছরই ভালো ফলন হয়ে থাকে। তাই প্রতিটি বাড়িতেই বেশ বড় করেই লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করা হয়। প্রতিটি বাড়িতে পুজোর পাশাপাশি ওই গ্রামে লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে যে মেলা বসে তা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে লোকজন আসে।” স্থানীয় এক গৃহবধূ সুজাতা দাস বলেন, “সকাল থেকেই আমরা পুজোর আয়োজন শুরু করেছি। দুর্গাপুজোর থেকে আমরা এই লক্ষ্মী পুজোতেই বেশি আনন্দ করি।” লক্ষ্মী-নারায়ণ, জয়া-বিজয়ার মূর্তি নিয়ে সেজে উঠেছে গোটা গ্রাম। পাঁচদিনের দুর্গাপুজোর আনন্দ লক্ষ্মীপুজোর দু’দিনেই পুষিয়ে নেন রায়গঞ্জের টেনহরি গ্রামের বাসিন্দারা। লক্ষ্মীপুজোয় আয়োজিত লক্ষ্মীমেলায় আসেন আশপাশের গ্রাম ও জেলা থেকে প্রচুর মানুষ। ফলে মেলাতেও ব্যবসায়ীদের ভালোই লক্ষ্মী লাভ হয়।