কী জানা যাচ্ছে?
বাঁকুড়ার ধানসিমলায় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের আয়োজনে পূজিতা হন ধনদেবী লক্ষী। সাম্প্রদায়িকতার নজির সৃষ্টি করে বাঁকুড়ার সোনামুখি ব্লকের ধানসিমলা গ্রাম। পুজোর আয়োজনে শম্ভুনাথ কর্মকার মণ্ডপ বাঁধছেন আর ওঁকে সাহায্য করছেন ইউসুফ মণ্ডল। প্রতিমা আনছেন মধুসূদন সাহা, মেহের আলি শেখ, আব্দুর রহমান মিদ্যারা। বছরের পর বছর ধরে ধনদেবীর আরাধনায় এলাকার হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের এমন অনন্য সম্প্রীতির ছবি উঠে আসে।
সম্প্রীতির মেলবন্ধন
বাঁকুড়ার সোনামুখি ব্লকের ধানসিমলা গ্রামে বছরের পর বছর ধরে পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। বাজারে একে অপরের গায়ে লাগানো দোকানে ব্যবসা করার পাশাপাশি একে অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানো হয়। সেই কারণে একে অপরের উৎসবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আয়োজন ও উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠার রেওয়াজ এই গ্রামের হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের মজ্জাগত।
দশ বছর ধরে চলছে পুজো
গত দশ বছর আগে এই গ্রামেই শুরু হয় ধনদেবীর আরাধনা। স্বাভাবিক ভাবেই সেই আরাধনায় হিন্দুদের পাশাপাশি যুক্ত হয়ে পড়েন গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনও। লক্ষ্মী পুজোর আয়োজক কমিটিতে শম্ভুনাথ কর্মকারের পাশাপাশি নাম লেখা হয় শেখ মেহের আলিরও। মণ্ডপ বাঁধা থেকে বাজার করা, ফল কাটা, ভোগের আয়োজন সবেতেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন শম্ভুনাথ কর্মকার, প্রকাশ কর্মকার, মধুসূদন সাহা, স্বপন নাগ, ইউসুফ মণ্ডল, মেহের আলি শেখ, আব্দুর রহমান মিদ্যা, রহমত শেখরা।
কী বলছেন তাঁরা?
ধনদেবীর পুজো করে আনন্দ উচ্ছ্বাস একই সঙ্গে মেতে ওঠেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের দাবি, সারা বছর তাঁরা একসঙ্গে বসবাস করেন। তাই পুজো বা উৎসবের সময় নিজেদের আর পৃথক করা যায় না। পুজো উদ্যোক্তা সেখ মেহের আলি বলেন, ‘বহুদিন ধরে সকলে মিলে আমরা এই পুজোর আয়োজন করি। পুজোর সমস্ত কাজ সকলে মিলে করা হয়। আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই।’ আবার পুজো উদ্যোক্তা শম্ভুনাথ কর্মকার বলেন, ‘ আমাদের পুজোতে যেমন ওঁরা সবাই মিলে হাত লাগায়, তেমনি ওদের সমস্ত অনুষ্ঠানে আমরা যোগদান করি। সকলে মিলেই এই আয়োজন করা হয়।’