Online Food Order : অনলাইনে খাবার অর্ডারে পুজোয় নজির প্রবীণদের – seniors person are ordering more food online this durga puja


কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সাতসকালে ফোন বাজতেই অবাক হয়েছিলেন অরুণ রায়চৌধুরী। কাছের আত্মীয় বলতে প্রায় সবাই তো তাঁর বাড়িতে। তা হলে পুজোর দিনে ফোন কার! ফোনটা ধরতেই ওদিক থেকে ব্যস্ত গলা শোনা গেল, ‘আপনাদের খাবারের অর্ডার ছিল, এনেছি।’ এর মধ্যেই! ফের অবাক হওয়ার পালা বছর সত্তরের অরুণবাবুর। একটু অপ্রস্তুত গলায় বললেন, ‘আপনি এত তাড়াতাড়ি এসে পড়বেন, বুঝতে পারিনি।’

খাবার নিতে বাড়ির বাইরে বেরোনোর পর ব্যস্তসমস্ত ডেলিভারি পার্সন দ্রুত বৃদ্ধকে শিখিয়ে দেন কী করে অর্ডার প্লেস করার পর রিয়েল টাইমে জানা যায় কখন ডেলিভারি পার্সন সেই অর্ডার তুললেন এবং ডেলিভারি দিতে কতটা এগোলেন। কয়েক মিনিট পর গরম লুচি আর আলুরদম সহযোগে জলখাবার সারতে সারতে বেশ কয়েক জন প্রবীণ নাগরিকের আলোচনার বিষয়টাই ছিল প্রযুক্তির প্রয়োগে কী ভাবে লাখ লাখ মানুষের খাবারের পদ্ধতিটাই বদলে গেল—বিশেষ করে পুজোর সময়।

বস্তুত, মহানগর ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভ্যেসে বড় রকমের বদল এনে দিয়েছে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থা। শহরে সক্রিয় ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলির পরিসংখ্যান বলছে, সাধারণ সময়ে দিনে ১৪-১৫ লক্ষ অনলাইন ডেলিভারি সামলাতে হয় তাদের। ২০২২-এর দুর্গাপুজোয় সেই সংখ্যা পৌঁছেছিল ১৮ লাখে।

২০২৩-এ ২৩ লাখ ছাড়িয়েছে। শহরের বিশেষ বিশেষ কিছু জায়গায় এক একজন ডেলিভারি পার্সনকে দিনে ২০০টি বাড়িতেও খাবার ডেলিভারি করতে হয়েছে। ডেলিভারি পার্সন সুশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘টানা এক সপ্তাহ প্রায় সারাদিনই কাজ করেছি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা কাজ বন্ধ থাকত।’ অন্য এক ডেলিভারি পার্সন শুক্লা বিশ্বাসের কথায়, ‘সকাল ৮টা নাগাদ কাজ শুরু হতো। ১১টা পর্যন্ত ব্রেক-ফাস্ট, এর পর ৪টে পর্যন্ত লাঞ্চ, তার পর স্ন্যাকস। সন্ধে ৮টা থেকেই শুরু হয়ে যেত ডিনার ডেলিভারি।’
Online Food Delivery : রান্নাঘরে হরতাল! প্রথম পছন্দ বিরিয়ানি, তার পরেই চাইনিজ
অনলাইনে খাবার অর্ডারে বিশেষ কোনও প্রবণতা কি লক্ষ্য করা গেল এই পুজোয়?

জনপ্রিয় দু’তিনটি সংস্থার কর্মীরা জানাচ্ছেন, পুজোয় সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি প্রবীণ নাগরিকদের সাড়া। সাধারণত ৫০-৭৫ বছরের মানুষজন পুরোনো স্বভাব বদলাতে চান না। কিন্তু এ বারের পুজো ব্যতিক্রমী। প্রচুর প্রবীণ নাগরিক পুজোর সময়ে অনলাইনে খাবার অর্ডার করেছেন। তবে তাঁরা খাবারের যে পদ পছন্দ করেছেন সেটা নবীনদের থেকে আলাদা।

যেমন জলখাবার হিসেবে প্রবীণদের পছন্দের শীর্ষে ছিল লুচি-আলুরদম। অন্য দিকে, নতুন প্রজন্মের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে চিকেন রোল। দুপুর এবং রাতের খাবারে অবশ্য অন্য সব পদকে হারিয়ে শীর্ষে ছিল বিরিয়ানিই, ঠিক ২০২২-এর মতো। তবে দুপুরে মাটন কষা এবং সাদা ভাত বা পোলাওও জনপ্রিয়তায় বেশ উপরের দিকেই ছিল। রাতের খাবারে চিলি-চিকেন এবং ফ্রায়েড রাইসের কম্বোও কম জনপ্রিয় ছিল না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *