অন্য হাইকোর্ট থেকে তিন বিচারপতির এই বদলি ধরে কলকাতা হাইকোর্টে ভিন রাজ্যের বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৭। এর আগে বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে বদলি হয়ে কলকাতায় আসার দেড় বছর পর প্রধান বিচারপতি হয়েছেন। তার পর ওডিশা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস, মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ভিএম ভেলুমণি এবং দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত বদলি হয়ে এখন কলকাতা হাইকোর্টে কর্মরত। অন্য হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি বদলি হয়ে কলকাতায় এলেও কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান বেশ কয়েক জন আইনজীবীকে বিচারপতি পদে অভিষিক্ত করতে কলেজিয়ামের বহু পুরোনো সুপারিশ এখনও কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পায়নি। দায়রা আদালতের বিচারকদের হাইকোর্টে বিচারপতি পদে উন্নীত করার একাধিক প্রস্তাবও পড়ে রয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের বিচারপতি পদে উন্নীত করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের টালবাহানায় ক্ষুব্ধ আইনজীবী সংগঠনের অনেকেই। হাইকোর্ট বার লাইব্রেরির প্রাক্তন সম্পাদক প্রমিত রায়ের মন্তব্য, ‘এক সঙ্গে এতজন ভিন রাজ্যের বিচারপতিকে একটি হাইকোর্টে পাঠানোর পিছনে কারণ স্পষ্ট নয়। আইনত বাধা না থাকলেও ব্যাপারটা অভূতপূর্ব। এ ক্ষেত্রে যাঁদের আপত্তি করা উচিত ছিল, তাঁরা হয়তো সেটা করেননি।’
হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম যখনই কলকাতা হাইকোর্টের জন্য এমন বদলি সুপারিশ করছে, কেন্দ্র তৎক্ষণাৎ তাতে সবুজ সংকেত দিচ্ছে। হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ বা সুপ্রিম কোর্টে এ রাজ্যের হাইকোর্ট থেকে যাঁরা আছেন–তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হচ্ছে কিনা, বুঝতে পারছি না। কেন্দ্র কেন বিচারপতি পদে এই হাইকোর্টের আইনজীবীদের নামে অনুমোদন না দিয়ে বছরের পর বছর ফেলে রেখে ভিন রাজ্য থেকে বিচারপতি পাঠাতে বেশি আগ্রহী, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’ আইনজীবীদের অনেকেরই বক্তব্য, শুধু আইনের ধারা দিয়ে বিচার হয় না, রাজ্যের ইতিহাস, ভূগোল, সমাজসস্কৃতি সম্পর্কে জানাও জরুরি। ভিন রাজ্যের এতজন বিচারপতিতে সেই শর্ত পূরণ হবে কি?