বর্ধমান ২-এর বিডিও বদলি হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলায়। সোমবার বিকেলে ব্লক থেকে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিন তাঁর অফিস ছাড়ার সময়ে কাঁদতে দেখা যায় শেফালি হাজরা, সাধনা দাস, চিন্তারানি হাজরাদের। এঁরা কখনও কোনও সরকারি সুবিধা পাননি। এমনই কিছু মহিলাকে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে ডেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বাধ্যক্য ভাতার ব্যবস্থা করে দেন বিডিও।
নিজের কথা বলছিলেন নবস্থা ১ পঞ্চায়েতের কলসা গ্রামের বাসিন্দা চিন্তারানি হাজরা। বার্ধক্য ভাতার জন্য বার বার পঞ্চায়েত থেকে ব্লক অফিসে হত্যে দিয়েছেন। কিন্তু বার্ধক্য ভাতা জোটেনি তাঁর। এদিন ৭০ বছরের সেই মানুষটি এসেছিলেন বিদায় জানাতে বিডিওকে।
বলেন, ‘আমরা গরিব। কী ভাবে সরকারি প্রকল্পে আবেদন করতে হয় জানি না। সব কাগজও ছিলনা। আট বছর ধরে ঘুরেছি। একদিন বিডিও ম্যাডামের ঘরে গিয়ে সব জানাই। উনি একমাসের মধ্যে আমার বিধবা ভাতা চালু করে দিয়েছেন। তাই যাওয়ার আগে একবার ওঁকে আশীর্বাদ জানাতে এলাম।’ সোনাপলাশির শেফালি হাজরা শোনান নিজের অভিজ্ঞতার কথা।
বলেন, ‘আমি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাই। স্বামী অসুস্থ। ম্যাডামকে বাজারে একবার আমার অবস্থার কথা বলি। আমাদের এলাকায় যখন দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হলো, উনি লোক পাঠিয়ে আমার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম পূরণ করে সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এখন আমি নিয়ম করে টাকা পাই। তাই ওঁর চলে যাওয়ার কথা শুনে কষ্ট হচ্ছে।’
মন ভারী বিডিও সুবর্ণা মজুমদারেরও। বলছেন, ‘এটা আমার দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে গিয়েছিল। প্রায় সাড়ে তিন বছর এই ব্লকে রয়েছি। ব্লকের মানুষ এতটা আপন করে নিয়েছিলেন যে আজ ওঁদের কথা বেশি করে মনে হচ্ছে। সরকার এখন বহু প্রকল্প চালু করেছে। সেই প্রকল্প সঠিক উপভোক্তাদের দরজায় পৌঁছে দিতে পেরেছি, এটাই সান্ত্বনা।’
বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, ‘আমাদের ব্লকে সরকারি প্রকল্পের বাস্তব রূপায়ণ বিডিও ম্যাডামের জন্যেই হয়েছে। কোনও সমস্যা হলে নিজে গিয়ে তার সমাধান করেছেন।’