কী বললেন রাজ্যপাল?
এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেন, ‘এমন কিছু মুল্যবোধ আছে যার সঙ্গে কোনও আপোস করা যায় না, যা চিরন্তন সত্য, চিরন্তন আবেগ কোনওদিন বদলায় না। প্রত্যেক ভারতীয় যাঁরা জনগণমন গান, তাঁদের হৃদয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি আলাদা আবেগ এবং সম্মান রয়েছে। সেই সম্মানের প্রতি প্রত্যেকের যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।’
রাজ্যপালকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশের সংস্কৃতিকে এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, তাই এমন কোনও উদাহরণ তৈরি করা ঠিক নয়, যেখানে গুরুদেব উপেক্ষিত হন, গুরুদেবের অবজ্ঞা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।’
কী নিয়ে বিতর্ক?
প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। সেই সম্মান প্রাপ্তির পর ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন এবং গৌরপ্রাঙ্গণে ৩ টি শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়। সেই ফলকে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নাম উল্লেখ থাকলেও, দেখা যায়নি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। আর সেই ঘটনাকে ঘিরেই তৈরি হয় বিতর্ক।
সরব হন মমতা
এদিকে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশ্বভারতীর মধ্যে নতুন করে দেখা দেয় সংঘাতের আবহ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গুরুদেবের আবাসস্থলে আত্মপ্রচারের ঘৃণ্য এবং অহংকারী প্রদর্শন অব্যাহত রয়েছে। শান্তিনিকেতনকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান নিজের ছোট নামটা স্মৃতি ফলকে জুড়ে দিয়েছেন। ঈশ্বরের দোহাই, যে ফলকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই তা সরিয়ে ফেলুন। গুরুদেবই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। মর্যাদা ও নম্রতা দেখান! কেন্দ্রের শাসকদের এহেন অনাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
এখানে শেষ হয় এই ইস্যুতে দলকেও আন্দোলনে নামার বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রীর নির্দেশের পর মঞ্চ বেঁধে শান্তিনিকেতনে শুরু হয় আন্দোলন। সেই মঞ্চ থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিশানা করে রাজ্যের শাসকদল। আর এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে সরাসরি বার্তা দিলেন রাজ্যপাল।