ঠিক কী হয়েছে?
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , দু’সপ্তাহ আগে ভৈরব ব্রিজের ইসলামপুর টোলপ্লাজার দিকের অংশে কয়েক ফুট চওড়ার গর্ত দেখা যায়। খবর পাওয়া মাত্রই PWD-র কর্তারা সেই ভেঙে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করেন। এরপরই ওই অংশ সারাইয়ের কাজ শুরু হয়। বুধবার ঠিক যে অংশে গর্ত সেখানে ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভারী যান চলাচলের ফলে ওই অংশে কম্পনজনিত কোনও সমস্যার সৃষ্টি যাতে না হয় ,সেই কারণে তিন দিনের জন্য যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
ব্রিজের গুরুত্ব
বহরমপুর জলঙ্গি রাজ্যসড়কের উপর ভৈরব নদীর উপর অবস্থিত ব্রিজটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ওই ব্রিজের ওপর দিয়েই ডোমকল মহকুমার নিত্যযাত্রীরা বহরমপুর যাওয়া আসা করে। এছাড়াও নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দারা বহরমপুরে যাওয়ার জন্য ওই ব্রিজের উপর নির্ভরশীল। আর এইরকম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সেতুর ওপর দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তির মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। ডোমকল, জলঙ্গি ,সাগরপাড়ার দিক থেকে বহরমপুরগামী সমস্ত বাসকে ব্রিজে ওঠার আগেই ইসলামপুর টোল প্লাজা এলাকায় আটকে দেওয়া হচ্ছে। পাশপাশি বহরমপুর থেকে ইসলামপুরের দিকে যাওয়ার সব’কটি বাসকে ব্রিজ থেকে প্রায় চারশো মিটার দূরে ইসলামপুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপর সেখান থেকে পায়ে হেঁটে, টোটোতে করে ব্রিজের একদিক থেকে অন্যদিকে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।আর এতেই ক্ষুব্ধ নিত্য যাত্রীরা।
কী বলছে স্থানীয়রা
বহরমপুর বানজেটিয়ার এক শিক্ষক বলেন, ‘আমি জলঙ্গির একটি স্কুলে চাকরি করি। রোজ বাসে করেই বানজেটিয়া থেকে জলঙ্গি আসা যাওয়া করি। কাল পর্যন্ত বাস ঠিকঠাক চলছিল , আজ হঠাৎ করে ইসলামপুর ব্রিজের কাছে আসতেই আমাদের নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপরে পুরো এক কিলোমিটার রাস্তা আমি হেঁটে ইসলামপুর থেকে জলঙ্গির বাসে চাপি। আমি চাইব এই সমস্যার যেন খুব দ্রুত সমাধান হয়।’ এক বাস চালক বলেন, ‘আমরা বছরে মোটা অঙ্কের টাকা রোড ট্যাক্স দিয়ে রাস্তায় বাস চালাই তারপরেও আমাদের ব্রিজে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ অটো, টোটো, লছিমন যাদের রাস্তায় চলার মত ঠিকঠাক অনুমতি পর্যন্ত নেই তারা এখন ব্রিজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এভাবে আমাদের ব্যবসার ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে।
কী বলছে প্রশাসন?
যদিও PWD-র বহরমপুর ডিভিশন -২ এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুজয় দাস বলেন , ‘এলাকার মানুষের সমস্যার কথা মাথায় রেখে সেতুটি সংস্কারের ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । সেতুটির ওই অংশে ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র ৭২ ঘণ্টার জন্য ওই ব্রিজের উপর দিয়ে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করাছ হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা পর সমস্ত রকম যানবাহনের জন্য সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হবে।’
বিকল্প রুট?
ভৈরব সেতু দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় বহরমপুরের সঙ্গে ইসলামপুর, রানিনগর, ডোমকল, জলঙ্গি, সাগরপাড়া, করিমপুরের সমস্ত সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ। শুধু মাত্র নওদা দিয়ে নদীয়ার করিমপুর ঢোকার রাস্তা রয়েছে। আপাতত যাত্রীদের সেতুর একপাড়ে নেমে এক কিমি হেঁটে অপর পাড়ে বাস ধরতে হবে আগামী ৭২ ঘন্টা।