বিতর্কে এসএসকেএম
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান নিজেই মন্তব্য করেন, তাঁর পায়ের ‘ভুল চিকিৎসার’ জন্য ক্ষতে সংক্রমণ হয়ে যায়। তাঁরই যদি চিকিৎসায় এই অবস্থা হয় তাহলে আপামোর জনগণ যাবেন কোথায়? হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার মান কি খারাপ হয়েছে? হাজার হাজার রোগীর চাপে চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’ থেকে যায়? মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে শুরু জলঘোলা। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিরোধীরাও।
কী প্রতিক্রিয়া জনগণের?
টালিগঞ্জ থেকে নিজের মেয়ের চিকিৎসা করাতে এসেছেন দেবাশিস। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কী বলেছেন জানি না! তবে আমি মেয়ের অ্যাপেন্ডিক্স-এর চিকিৎসার জন্য এসেছিলাম। ওর অস্ত্রোপচার হয়ে গিয়েছে। আমি ভালো সার্ভিস পেয়েছি।’ নিজের বাচ্চার চিকিৎসা করাতে শেষ দু বছর থেকে পিজি হাসপাতালে আসছেন মেটিয়াবুরুজ থেকে আব্দুল ফারুক মোল্লা। তাঁর কথায়, ‘আমি তো বাচ্চার চিকিৎসার জন্য দুই বছর ধরে আসছি। ওর যথেষ্ট ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। ও এখন অনেক ভালো আছে। এখানকার চিকিৎসক এবং নার্স দিদিরা খুব ভালো।’
কেন ক্ষোভ রয়েছে?
বিরূপ প্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেকের। বিশেষত, হাসপাতালে বেড পাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে রোগী ও পরিজনদের মধ্যে। রাজনৈতিক প্রভাব না খাটালে জায়গা পাওয়া যায় না, এরকমও মনে করেন অনেকে। সেরকমটাই জানালেন উলুবেড়িয়া বাসিন্দা শেখ সাইফুল। তিনি বলেন, ‘একটা রোগীকে ভর্তি করতে গেলে সারাদিন লেগে যায়। অনেকের হয়, অনেকের হয় না। মন্ত্রীদের ব্যাপারটা আলাদা, কিন্তু আমাদের কী হবে?’
যদিও, বহু মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন পিজি হাসপাতালে আউটডোর বিভাগে দেখানোর জন্য। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালে হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসার জন্য নতুন টিকিট ইস্যু হয় প্রায় ৫ লাখ ২৯ হাজার। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ‘ফ্রি মেডিসিন শপ’ চালু করার পর সেটা পরের বছর হয়ে যায় দ্বিগুণ। আউটডোরে রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১২ লাখ। স্বাস্থ্য দফতরের একটি রিপোর্টে জানায়, ২০২২ সালে আউটডোরে ২০ লাখ এবং ইনডোরে দেড় লাখ রোগী দেখে পিজি। যা সর্বকালীন রেকর্ড হয়ে রয়েছে।