Elephant Attack : হাতির তাণ্ডবে বেঘোরে মৃত ৪, আতঙ্ক কোচবিহারে – four person lostlife in elephant attack panic in cooch behar


এই সময়, কোচবিহার: হাতিদের তাণ্ডবে বেঘোরে প্রাণ গেল চার গ্রামবাসীর৷ মৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা। গত দু’দিন ধরে কখনও কোচবিহারের দিনহাটা, কখনও বা মাথাভাঙায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ছ’টি হাতির দল। তাদের জঙ্গলে ফেরাতে বনকর্মীরা ব্যর্থ হওয়ায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতদের পরিবার। গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোচবিহারের বনবিভাগের আধিকারিক বিজন নাথ।

তিনি বলেন, ‘জলদাপাড়া ও কোচবিহারের উদ্ধারকারী দল বৃহস্পতিবার থেকে হাতিগুলিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যতটা সম্ভব কম ক্ষতি করে দ্রুততার সঙ্গে হাতির দলকে পাতলাখাওয়া বা জলদাপাড়ার জঙ্গলের দিকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে।’ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দিনভর চেষ্টা করেও হাতিদের জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে পারেননি বনকর্মীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন বুদ্ধেশ্বর অধিকারী (৬০), আনন্দ প্রামাণিক (৪০), রেখারানি রায় (৬৮) ও জয়ন্তী সরকার (৪৬)। প্রথম দু’জনের বাড়ি মাথাভাঙার পারাডুবি গ্রামে। বাকি দুই মহিলার বাড়ি ঘোকসাডাঙার উনিশবিশা গ্রামে। শুক্রবার সকালে মাথাভাঙার পারাডুবি গ্রামের মাঠে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়ে হাতির হানায় প্রাণ হারান বুদ্ধেশ্বর অধিকারী। দুপুরে জমিতে কাজ করার সময়ে হাতির হামলার মুখে পড়ে প্রাণ যায় আনন্দ প্রামাণিকের।

মৃত বুদ্ধেশ্বরের ভাইপো দেবেশ্বর অধিকারী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিনহাটার বিভিন্ন গ্রামে হাতির দল ঢুকেছে সেটা শুনেছিলাম। কিন্তু সেই হাতির দল যে সাতসকালে মাথাভাঙার পারাডুবির গ্রামে চলে আসবে তা ভাবতে পারেননি কেউ-ই। হাতির দলকে বনকর্মী ও হুলাপার্টি কেন জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে পারল না আমরা বুঝতে পারছি না। শুধু তাই নয়, হাতিরজল যে এই গ্রামে এসেছে সেজন্য কোনও প্রচারও করেনি বনদপ্তর।’ জানা গিয়েছে,

পারাডুবি গ্রামের মাঠে দু’জনের মৃত্যু পরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা দলবদ্ধ হয়ে হাতিদের তাড়াতে শুরু করেন। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে দু’ দলে ভাগ হয়ে ৪টি হাতি চলে যায় ঘোকসাডাঙার উনিশবিশা গ্রামের দিকে৷ একটি হাতি দলছুট হয়ে ঘোকসাডাঙা স্টেশনের প্লাটফর্মের দিকে ছুটতে থাকে। পরে ঘোকসাডাঙার উনিশবিশা গ্রামের বাজারের দিকে আসা দুই মহিলা রেখারানি রায় ও জয়ন্তী সরকারকে পিষে দেয় একটি হাতি।

বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাতলাখাওয়া হয়ে ৬টি হাতি বুধবার রাতে চলে আসে কোচবিহারের দিকে। বৃহস্পতিবার সকালে হাতিগুলিকে দেখা গিয়েছিল কোচবিহার ১ ব্লকের হাড়িভাঙা গ্রামে৷ এরপর হাতির দল চলে যায় দিনহাটার মাতালহাট গ্রামে। সেখানেও হরেন বর্মন নামে গ্রামবাসী হাতির হামলায় আহত হন। বৃহস্পতিবার দিনভর হাতির দল দাঁপিয়ে বেরিয়েছিল মাতালহাট গ্রামে৷ তাদের বনাঞ্চলে ফেরাতে দিনভর চেষ্টা চালান জলদাপাড়া ও কোচবিহারের বনবিভাগের কর্মীরা।

Coorg Coffee Plantation : কাঁচা কফির নেশায় মত্ত হাতির দল, সারা বছরই দীপাবলি কুর্গে
জানা গেছে রাতের অন্ধকারে হাতির দল চলে যায় শীতলকুচির দিকে। ছয়টি দলের মধ্যে একটি বাচ্চা হাতি সহ তিনটি হাতি আছে পূর্নবয়স্ক। বাকি হাতি গুলি মাঝবয়সী। ফায়ার ক্রাকার ফাঁটিয়ে শুক্রবার দিনভর বনকর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন হাতির দলকে বনাঞ্চলে ফেরত পাঠাতে। জানা গেছে ধান পাকার মরশুমে প্রতিবছর জমির ফসলের টানে বনাঞ্চল গুলি থেকে লোকালয়ে চলে আসে হাতির দল। এর আগেও নভেম্বরে দুটি হাতি এসেছিল মাথাভাঙ্গার ঘোকসাডাঙ্গা গ্রামে।

পুরোনো চেনা পথ ধরেই সেই হাতি গুলি এবারে বড়ো দল নিয়ে ফের লোকালয়ে চলে এসেছে বলে অনুমান বনদফতরের। তবে বনদফতর হাতিগুলিকে নির্জন এলাকা দিয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিলে এই প্রাণহানি ঘটত না বলেই দাবি মৃতের পরিবারের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *