Nepal Earthquake: নেপালের কম্পনে সিঁদুরে মেঘ মহানগরের আকাশেও – nepal earthquake tremors left kolkata in fear after seeing the effect here is the explanation


এই সময়: পুরভোটের শহরে টানা টান উত্তেজনা। ভোট নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় পারদ চড়ছিল মহানগরের। তারই মধ্যে কেঁপে উঠেছিল শহর। আক্ষরিক অর্থেই কেঁপে ওঠা। দিনটা ছিল ২৫ এপ্রিল, ২০১৫। সেবার কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত যে কম্পনের সাক্ষী হয়েছিল, সেই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল নেপালের গোর্খা জেলার বারপাক। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। সেই কম্পনে নেপাল থেকে বহু দূরে কলকাতায় কিছু বাড়িতে ফাটল পর্যন্ত ধরেছিল।

শুক্রবার মাঝ রাতে কেঁপে উঠল দিল্লি। মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে তিলোত্তমাতেও। এবারও ভূমিকম্পের উৎসস্থল সেই নেপাল। কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। ভূমিকম্পের উৎসস্থল লখনৌ থেকে ২৫৩ কিলোমিটার দূরে, কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় সাড়ে ন’শো কিলোমিটার। ভূমিকম্পের অভিকেন্দ্র মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার নীচে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নেপালের ভূমিকম্পে কেন বারবার কেঁপে উঠছে উত্তর ও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন শহর? শুক্রবার নেপালের পশ্চিমভাগে হয়েছে ভূমিকম্প। সেই জন্যই তার অভিঘাতে কেঁপে উঠেছিল দিল্লি। কিন্তু বিপর্যয় যদি হয় পূর্ব প্রান্তে? তা হলে উত্তরবঙ্গ তো বটেই, বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সে ক্ষেত্রে বিপদ বাড়তে পারে কলকাতারও। কারণ, হিমালয়ের পাদদেশে থাকা সব এলাকাই ভূমিকম্পপ্রবণ। সেদিক থেকে কলকাতা ভূমিকম্পপ্রবণ ও মৃদু ভূমিকম্পপ্রবণ জ়োনের মধ্যে পড়ে। তবে ক্ষতি কতটা হতে পারে, তা নির্ভর করছে কতটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে হচ্ছে নগরায়ন। শুক্রবার কম্পনের যা মাত্রা ছিল, তাতে নেপালে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার কারণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং জনঘনত্ব। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বৃহত্তর দিল্লি সিসমিক জ়োন-৪ এর মধ্যে পড়ে। উত্তরবঙ্গ জ়োন-৫ এলাকাভুক্ত।

কেন দিল্লি জ়োন-৪ এর মধ্যে পড়ে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা মূলত দিল্লির ভৌগোলিক অবস্থান এবং ভূতাত্ত্বিক বিশেষত্বের কারণে। ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে হিমালয় তৈরি হয়েছিল। এই কার্যকলাপের ফলে নিয়মিত কম্পন হয়, যা এই অঞ্চলটিকে ভূমিকম্প এবং ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কেন্দ্রস্থল করে তোলে। ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ভূমিকম্পের আরও আশঙ্কা থাকছে বলেও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞেরা।

Earthquake Alert: মাঝরাতে তীব্র কম্পন! ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানী সহ কলকাতাও
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক শান্তনু বসু বলছেন, ‘ধরা যাক, একটি কাঠের টুকরোর উপরে একটি নির্দিষ্ট ওজন দেওয়া হলো। একটা সময় পরে সেই কাঠের টুকরোটির সহনশীলতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। সেই অবস্থায় যদি ভার সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে তার অভিঘাতে কাঠটি নিজের অবস্থানে ফেরার চেষ্টা করবে। ফলে তার মধ্যে একটা আন্দোলন হবে। আবার ভার সইতে সইতে কাঠের টুকরোটিতে এক সময় চিড় ধরবে। তার জেরেও একটা আন্দোলন হবে। মাটির গভীরে এ রকম অবস্থা নিরন্তর চলে। হিমালয়ের পাদদেশ এলাকাগুলিতে এই ধরনের ঘটনা যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে।’ তাঁর মতে, এবার ক্ষতি কতটা হবে, তা নির্ভর করছে এই উৎসস্থল কোথায় তার উপরে। শুক্রবার কম্পনের মাত্রা যা ছিল, তার থেকে আরও বেশি কম্পন হলেও মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে–এমন উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্ষতির মূল কারণ, জনঘনত্ব এবং বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের নকশা।

ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপ নেপাল, মৃত ১২৮!

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের নির্মাণ যদি বিজ্ঞানসম্মত হয়, তা হলে ক্ষতি কম হবে। অপরিকল্পিত নগরায়নের মূল্য চোকাতে হয়েছে উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রানাঘাট থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত একটি এলাকা ভূমিকম্পের সম্ভাবনার নিরিখে যথেষ্ট উদ্বেগজনক জায়গায় রয়েছে। আবার মাটির ধারণক্ষমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর না দিয়ে যেভাবে নগরায়ন হচ্ছে, তার জন্য কলকাতার ঝুঁকিও কিছু কম নয়। রাজারহাট, বেহালা, নিউটাউনে যে নগরায়ন হয়েছে, সেটাও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *