Flat In Kolkata,’নাতির প্রসাদ পেয়েছি, কিছুই চাওয়ার বাকি নেই’, লিখে আত্মঘাতী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা – a senior citizen couple lost life after wrote a letter in garfa flat


এই সময়: রোজকার মতো বুধবার সকালেও এসেছিলেন দুধওয়ালা। পরপর তিন বার কলিং বেল বাজালেও দরজা খোলেননি পাঁচতলা ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সবিতা প্রামাণিক(৬০)। একই অভিজ্ঞতা হয় সংবাদপত্র বিক্রেতারও। অথচ সবিতা যে থাকবেন না, সেকথা আগাম জানাননি কাউকে। প্রতিবেশীদের কাছেও সবিতা এবং তাঁর স্বামী পেশায় ব্যবসায়ী সুধন্য প্রামাণিকের(৬৬) বিষয়ে কিছুই জানতে পারেননি দুধওয়ালা এবং হকার।

এরপর সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই দম্পতির ছেলে শুভ প্রামাণিক পুরী থেকে ফিরে এসে মা-বাবাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। তিনিও দেখতে পান, দরজার ভিতর থেকে তালা দেওয়া রয়েছে। নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই দেখা যায়, ডাইনিং রুমে ঝুলছে বাবার দেহ। মা গলায় দড়ি দিয়েছেন বেডরুমে। ছেলের চোখ আটকে যায় ডাইনিং রুমের টেবিলে রাখা একটি সুইসাইড নোটে।

ওই নোটে নিজেদের মৃত্যুর জন্য কাউকেই দায়ী করেননি ওই বৃদ্ধ দম্পতি। উলটে তাঁরা ছেলেকে পরামর্শ দিয়েছেন, ৫ বছরের নাতিকে ভালো করে মানুষ করার। লেখা হয়েছে, নাতির প্রসাদের জন্যই তাঁরা অপেক্ষা করে ছিলেন। সেই প্রসাদ পেয়ে গিয়েছেন। আর কোনও চাওয়া বাকি নেই। এরই পাশাপাশি, বাড়ির গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র কোথায় কোথায় রাখা রয়েছে সে কথাও ওই নোটে লিখে গিয়েছেন সুধন্য-সবিতা।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন ওই দম্পতি। তবে কী কারণে একসঙ্গে তাঁরা এই পথ বেছে নিয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ৯ মাস আগে গড়ফার পূর্বাচল রোডের একটি ফ্ল্যাটের পাঁচতলায় ছেলে-বৌমার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন ওই দম্পতি।

এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁদের তেমন যোগাযোগ ছিল না। অধিকাংশ সময় ঘরের মধ্যেই থাকতেন তাঁরা। শুক্রবার বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে শুভ পুরী গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী এবং ৫ বছরের সন্তান। বুধবার সকালে তাঁদের ফেরার কথা ছিল। এদিন সকাল আটটা নাগাদ এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে বাবা-মা দরজা খুলছেন না বলে জানতে পারেন শুভ। ফিরে এসে ওই দৃশ্য দেখতে পান।

NIA Raids : বঙ্গের ধৃত তিনের হাওয়ালা যোগ?
মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল মনে করেন, ‘হয়তো নতুন পাড়ায় এসে কারও সঙ্গে সেভাবে মিশে উঠতে না পারার কারণেই একাকীত্ব বাড়তে শুরু করেছিল ওই দম্পতির। তবে, এটাই শুধু মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। হয়তো আরও কোনও বড় আঘাত পেয়েছিলেন দুজন। কারণ, বড় আঘাত ছাড়া এমন পদক্ষেপ কেউ নেয় না।’

লালবাজার সূত্রে খবর, পুরী যাওয়ার আগে বাবা-মায়ের আচরণে কোনও পরিবর্তন তিনি দেখেননি বলে জানিয়েছেন মৃত বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ছেলে শুভ প্রামাণিক। এমনকী, বাবা-মায়ের আত্মহত্যার মতো কোনও কারণও তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না বলেও পুলিশের কাছে দাবি তাঁর। সুইসাইড নোটে ওই দম্পতি লিখেছেন, ‘নাতির প্রসাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। সেটা পাওয়া হয়ে গিয়েছে।’

সই জাল করে সম্পত্তি হাতাল ছেলে-বৌমা! আদালতে মা
কিন্তু ছেলে-বৌমা-নাতি তো বুধবারেই ফিরেছেন, তাহলে কোন প্রসাদের কথা বলতে চেয়েছেন তাঁরা, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘আত্মহত্যার সমস্ত কারণই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছেলে-বৌমার অনুপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে কারা এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *