রুপোলি পর্দায় এই দৃশ্য দেখে হেসে গড়িয়ে পড়েন দর্শক। কিন্তু সহজে ভাঙে না, এমন বাঁশের সাহায্যেই এ বার ভারতের হাইওয়ে নিরাপত্তা বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে জাতীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রক। হাইওয়ের ধার বরাবর তৈরি ক্র্যাশ ব্যারিয়ারে ইস্পাতের বদলে এমন বাঁশ ব্যবহার করলে কার্যকারিতা কিছু কম হবে না বলে মনে করছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
এ জন্য ক্র্যাশ ব্যারিয়ারে ব্যবহারের জন্য দেশের উত্তর-পূর্বের জঙ্গলে জন্মানো বাঁশের বিশেষ এক প্রজাতিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচআই)-র এক আধিকারিক জানান, ‘বাম্বুসা বালকুয়া’ প্রজাতির এই বাঁশ দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮০ ফুট এবং চওড়ায় ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। অভিঘাত সহ্য করার ক্ষমতাই এর বৈশিষ্ট্য। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির বাঁশ পরিণত অবস্থায় এক বর্গ সেন্টিমিটারে ৪৭০ কেজি পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে পারে।
মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের প্রায় ২০০ কিলোমিটার এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে বাঁশের ক্র্যাশ ব্যারিয়ারের ব্যবহার শুরু হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাহুবলী’। কিন্তু ইস্পাতের বদলে বাঁশের ক্র্যাশ ব্যারিয়ার কতটা যুক্তিযুক্ত এবং নিরাপদ? এনএইচআই-এর এক আধিকারিক বলেন, ‘প্রথমে বাঁশটিকে ক্রিয়োজ়োট তেলে ভেজানো হবে। এর পর তার উপর হাই ডেনসিটি পলি ইথিলিনের প্রলেপ দেওয়া হবে। এতে বাঁশ সহজে নষ্ট হবে না।’
কিন্তু যতই শক্তপোক্ত হোক না কেন, শক্তিতে সে কখনই ইস্পাতের সমতুল হতে পারে না। এ কথা জানার পরেও কেন এমন ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত কেন? প্রযুক্তিবিদদের একাংশ মনে করেন, পূর্ণ গতিতে ধেয়ে আসা একটি গাড়ি যদি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্টিলের ক্র্যাশ ব্যারিয়ারে আছড়ে পড়ে, তা হলেও সে রক্ষা পাবে না। বরং বাঁশের ক্র্যাশ ব্যারিয়ার এমন ভাবেই তৈরি হবে, যাতে তার শক অ্যাবসর্ব করার ক্ষমতা বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কা অনেকটাই কম।
এমনিতে হাইওয়ের ক্র্যাশ ব্যারিয়ার অনেক ক্ষেত্রে রাস্তায় গবাদি পশুর ঢুকে পড়া আটকাতে কাজে আসে। দেশের প্রায় ১৩ লাখ হেক্টর এলাকা জুড়ে ‘বাম্বুসা বালকুয়া’ জন্মায়। খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠা এই বাঁশের জোগানের সমস্যা নেই বলেও মনে করছেন কর্তারা।