Visva Bharati University : পাঁচ বছরেই ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট’ বিশ্বভারতীর অন্তত ৪০০! – about 400 teachers officials teaching staff students face the punishment of visva bharati university vc


এই সময়, কলকাতা ও বোলপুর: পাঁচ বছরের ‘রাজত্ব’। আর তাতেই উপাচার্যের কোপে পড়তে হয় বিশ্বভারতীর প্রায় ৪০০ জন শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়াকে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সরে যেতেই তাঁর জমানায় যে শিক্ষক-আধিকারিক-পড়ুয়ারা বারবার শাস্তির মুখে পড়েছেন, তাঁরা সঠিক বিচারের দাবি তুলছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, এই ৪০০ জনের মধ্যে কাউকে বিদ্যুৎ সাসপেন্ড করেছেন, কাউকে শো-কজ়, কাউকে পদ থেকে সরিয়েছেন, এমনকী কয়েকজনের চাকরি পর্যন্ত গিয়েছে।

কিছু অবসরপ্রাপ্তের পেনশন বন্ধ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মামলা হয়েছে। গত বছর তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় একটি প্রশ্নের জবাবে বিশ্বভারতী জানায়, জেলা আদালত এবং কলকাতা হাইকোর্ট মিলিয়ে মোট ৯১টি মামলা হয় কর্তৃপক্ষ এবং উপাচার্যের বিরুদ্ধে।

বিদ্যুৎ পদ সরতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তেও গতি এনেছে জেলা পুলিশ। জানা গিয়েছে, ছ’টি পৃথক মামলায় তাঁকে নোটিস দিয়ে শান্তিনিকেতন থানায় তলব করা হয়েছে। ১০ নভেম্বর থেকে পরপর হাজিরার তারিখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নিলেন কলাভবনের অধ্যাপক এবং ভারপ্রাপ্ত ভিসি সঞ্জয়কুমার মল্লিক।

কাজে যোগ দিয়েই তাঁর বক্তব্য, ‘বিশ্বভারতীর সমস্ত সমস্যার সমাধান জানতে চেয়ে আমি মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছি। তারা জানালেই আমি পদক্ষেপ করব।’ বিদ্যুতের আমলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিশ্বভারতীর রচিত হওয়া দূরত্ব মেটানোর কথা বলেছেন সঞ্জয়। পৌষমেলা নিয়েও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব বলছে, গত পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর প্রশাসন ১৮০ জনকে শো-কজ় করেছে। তাঁদের সিংহভাগের বিরুদ্ধে চার্জশিট এনে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। শিক্ষক সমিতির তরফে সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, আরও ২০০ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগ থেকে ট্রান্সফার করা হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বভারতীর ২১ জন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ১৮ জনকে। ৫ জন আধিকারিক বাধ্য হয়েছেন পদত্যাগ করতে। দু’জনের ডিমোশন হয়েছে। প্রাক্তন উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ফিনান্স অফিসার-সহ মোট ১৫ জন শিক্ষক-আধিকারিকের চাকরি গিয়েছে। স্যালারি এবং পেনশন বন্ধ হয়েছে ১৪ জনের। অন্তত ১২ জন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সব মহলেরই দাবি, এপ্রিলের পর থেকে এই সংখ্যাটা এখন আরও বেড়েছে।

বিদ্যুতের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি অবশ্য অতীতে বারবার দাবি করেছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা ‘নটোরিয়াস’। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পীযূষকান্তি ঘোষের বক্তব্য, ‘আমি আরটিআই করে জানতে চেয়েছিলাম কতজন শিক্ষক ক্লাস নেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, দুর্নীতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় কী ব্যবস্থা নিয়েছে— এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কর্তৃপক্ষ দেননি।’

Visva Vharati University : অবসরের পরেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে পুলিশের নোটিশ, ১৪ নভেম্বর হাজিরার নির্দেশ
সুদীপ্তর সংযোজন, ‘আমি দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় এক বছর ন’মাস সাসপেন্ড করে রেখেছিল।’ ঘটনা হলো, এই সাসপেনশনের ঠেলায় তিন কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে বিদ্যুতের চোখে অভিযুক্তদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতেই। প্রতিষ্ঠানের বরখাস্ত হওয়া ফিনান্স অফিসার শমিত রায়ের বক্তব্য, ‘আমরা আদালতে গিয়েছি। সেখানেও মামলা ঝুলিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্য।’

বুধবার রাতে বিদ্যুৎ-বিদায় স্পষ্ট হতেই মিষ্টি বিলিতে নেমে পড়েন শান্তিনিকেতনের অনেকে। টানা ১৪ দিনের ধর্না আন্দোলন এ দিন সকালে প্রত্যাহার করে ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ঢোকানোর জন্য নতুন ভিসিকে কিছুটা সময় দিয়েছে তৃণমূল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *