আদালত কী জানাল?
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যের সাময়িক স্বস্তি হাইকোর্টে। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের পাঁচটি মামলায় আগামী ২০ ও ২২ নভেম্বর তাঁকে বাড়িতে গিয়ে, দু’দিনে প্রতিটি মামলায় এক ঘণ্টা করে সময় দিয়ে জেরা করতে পারবে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, কেন একদিনের নোটিসে তাঁকে থানায় তলব করা হচ্ছে, প্রশ্ন তোলে আদালত।
একাধিক মামলা
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের ডেপুটি রেজিস্টার প্রশান্ত মেশরাম প্রাক্তন উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্তার বিরুদ্ধে জাতি বিদ্বেষের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ন-এর প্রজেক্টে কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন এক অধ্যাপক। মানস মাইতি নামে এক অধ্যাপক ওই প্রকল্প থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।
আদালতের নির্দেশ
সার্ন-এর প্রজেক্ট সম্পর্কিত মামলায় এর আগে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মামলা শুনে বিচারপতি বলেছিলেন, ‘ এই কারণেই বাঙালি কাঁকড়ার জাত।’ এছাড়াও পদোন্নতি আটকাতে নানা ষড়যন্ত্র এবং তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ায় তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলেও আদালতের দ্বারস্থ হন প্রশান্ত মেশরাম।
উল্লেখ্য, একাধিক মামলা থাকায় শুক্রবার সকালে আদালতে দ্বারস্থ হন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পাশাপাশি, একটি তদন্তের বিষয়ে শান্তিনিকেতন থানা থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলেই খবর। সবেমাত্র মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। এর মধ্যেই একাধিক মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জর্জরিত বিদ্যুৎ।
প্রসঙ্গত, ৮ নভেম্ভর উপচার্য হিসেবে মেয়াদ শেষ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। বিশ্বভারতীর অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন কলাভবনের অধ্য়াপক সঞ্জয় মল্লিক। উপাচার্য থাকাকালীন একাধিক বিষয়ে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ। রাজ্যের সঙ্গে জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তা নিয়ে বিরোধ থেকে শুরু করে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত জটিলতা এবং সাম্প্রতিক ফলক বিতর্ক। একাধিক বিষয়ে নাম জড়িয়ে পড়েছিল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। ফলক বিতর্ক নিয়ে শেষ কয়েকদিন তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে আক্রমণ করতে দেখা যায় বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাকেও।
এদিকে, শুক্রবার ফের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নোটিশ ধরায় শান্তিনিকেতন থানা। শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর যে সরকারি বাসভবন সেই ‘পূর্বিতা’তে রয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেখানে তাঁকে নোটিশ দিতে যায় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। তাঁকে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।