বীরভূম মানেই ইতিহাস বা পৌরাণিক কাহিনী সমৃদ্ধ একটি জেলা। সেই বীরভূম জেলার কোটাসুর গ্রামকে ঘিরে রয়েছে একাধিক ইতিহাস ও পৌরাণিক ঘটনার সম্ভার। রয়েছে মহাভারত যোগও। কমবেশি সকলেরই জানা এই প্রদীপের ইতিহাস। এই প্রদীপ আজও মহাভারতের জ্বলন্ত সাক্ষী। বীরভূমের ময়ুরেশ্বরের অন্তর্গত কোটাসুর মদনেশ্বর শিব মন্দিরে জ্বলতে থাকা এই প্রদীপ নিয়ে এখন যত চর্চা। প্রদীপের আকৃতি দেখেও অবাক হয়ে যেতে হয়।
প্রদীপের সঙ্গে জড়িয়ে মহাভারতের ইতিহাস
কথিত আছে পঞ্চপাণ্ডব ও দেবী কুন্তী যখন অজ্ঞাতবাসে ছিলেন তখন থেকেই জ্বলে আসছে এই প্রদীপ। অজ্ঞাতবাসের সময় বীরভূমের বীরচন্দ্রপুর লাগোয়া কোনও এক জায়গায় দেবী কুন্তী এই বিশাল আকার প্রদীপ নিয়ই পুজো দিয়েছিলেন কোটাসুরের আরাধ্য দেবতা দেবাদিদেব মহাদেব মদনেশ্বরকে। আর সেই প্রদীপ আজও সংরক্ষিত রয়েছে মদনেশ্বর শিব মন্দির চত্বরে।
কোটাসুর গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে রবিবার দীপাবলীর সন্ধ্যায় জ্বালানো হয় সেই প্রদীপটি। কয়েক লিটার তেল ঢেলে প্রদীপটিকে জ্বালানো হয়। স্থানীয়দের দাবি, আগেও একাধিকবার দীপাবলির সন্ধ্যায় জ্বালানো হয়েছিল এই প্রদীপটি। তবে প্রত্যেক বছর প্রদীপটি জ্বালানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঝড়, বৃষ্টি ও প্রখর রোদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই প্রদীপটি মন্দির চত্বরে পড়ে রয়েছে। সেই কারণে মন্দিরের বিভিন্ন অংশে ক্ষয় হয়েছে। তবে যেহেতু এই প্রদীপের সঙ্গে মহাভারতের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে, তাই তা সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। স্থানীয়দের মতে, প্রদীপটি সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে যুগের পর যুগ তা মহাভারতের ইতিহাস বহন করে নিয়ে যাবে।
কী বলছেন স্থানীয়রা?
কোটাসুর গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘পাণ্ডবরা যখন অজ্ঞাতবাসে বীরচন্দ্রপুরে এসেছিলেন, তখন কুন্তীদেবী এই শিবমন্দিরে পুজো করতে বলেই আমরা জানি। স্থানীয়রা কয়েক বছর ধরে দীপাবলির দিন এই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে আসছি। মহাভারতের ইতিহাসে গোটা বিশ্ব সম্বৃদ্ধ। তার অন্যতম সাক্ষী এই প্রদীপ। তাই এই প্রদীপ সংরক্ষণের অসীম গুরুত্ব রয়েছে। আমরা চাই এই প্রদীপ সংরক্ষণ করা করা হোক। তাহলে আগামী প্রজন্মও এই প্রদীপ সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন।’