কী এই উৎসব?
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এটাই এক ধরণের কার্নিভাল। প্রায় চারশো বছর ধরে কোটা গ্রামের এটাই রীতি। গ্রামে যে সমস্ত কালী পুজো হয়। তার সঙ্গে শিবের পুজো ও হরগৌরীর পুজো হয়। সেই সমস্ত মূর্তি কোটা গ্রামের একটি পুকুরে ভেলা বানিয়ে তার উপরে মূর্তি উঠিয়ে গোটা পুকুর প্রদক্ষিণ করা হয়। এটাই ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান বলে পরিচিত। ভেলা ভাসান দেখতে পুকুরের চারপাশে উপচে পরে মানুষের ভিড়।
প্রাচীন রীতি
প্রতি বছরের মত এবছরও বিকাল ৪টা থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় সমস্ত দেবী ওই পুকুরেই বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রাচীন কাল থেকে এটাই রীতি। ভেলা ভাসান অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বসে মেলা। ৪দিন ব্যাপী চলে নানান অনুষ্ঠান।
কথিত আছে, প্রায় ২৫০ বছর আগে গ্রামের মানুষ স্বপ্নাদেশ পান মায়ের মূর্তি বিসর্জনের সময় ভেলায় করে বিসর্জন দেওয়ার। সেই থেকে গ্রামের পুকুরে সমস্ত কালীমূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, গ্রামের সমস্ত জায়গায় পুজো শেষে সমস্ত প্রতিমা এক জায়গায় এনে পুকুরে ভেলা ভাসিয়ে সারা পুকুর প্রদক্ষিণ করা হয়। আর এই ভেলা ভাসানকে কেন্দ্র করে মানুষের ঢল নামে কোটা গ্রামে। প্রতি বছর ভাই ফোঁটার দিন বিকাল থেকে ভাসান শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
কী বলছেন স্থানীয়রা?
স্থানীয় এক বাসিন্দা মঙ্গলি মাঝি বলেন, ‘এখানে সব প্রতিমা নিয়ে এসে পুকুরে ভাসান দেওয়া হয়। ভেলা ভাসান হয়। আমি প্রায় ১৭ বছর থেকে এই অনুষ্ঠানে এসে অংশগ্রহণ করি। খুবই আনন্দ হয় এই অনুষ্ঠানে। আরেক বাসিন্দা আশিস মুন্সী বলেন, ‘ এখানে ভেলার উপর ঠাকুরকে চাপিয়ে প্রদক্ষিণ করা হয়। বহুযুগ থেকে এই রীতি চলে আসছে। বহু দূর থেকেও মানুষ আসেন এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। পুরনো রীতি মেনে আজও এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। সকলে আমরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে খুবই আনন্দ উপভোগ করি।’ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বহু দূর থেকেও গ্রামবাসীরা এই অনুষ্ঠানে এসে যোগ দেন।