পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বাড়ির মালিক গোপাল মুখোপাধ্যায় তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, এক নেপালি দম্পতি ওই ঘরটি পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন ২০১৮-এ। ২০২১-এ হঠাৎই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তবে ভাড়ার টাকা তারপরেও বেশ কয়েক মাস ধরে মেটানো হচ্ছিল। মাস ছয়েক আগে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। বাড়ির মালিক পুলিশকে এটাও জানিয়েছেন, ওই দম্পতির বয়স ছিল তিরিশের আশপাশে। উদ্ধার হওয়া কঙ্কালসার দেহটির বয়সও তেমনই কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে চান তদন্তকারীরা। পাশাপাশি যে দম্পতি এর আগে ঘরটি ভাড়া নিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া দেহটির ডিএনএ ম্যাচ করানোর কথাও ভাবছে পুলিশ। যদিও বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ভাড়াটেদের যে ফোন নম্বর পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা, সেটি সুইচড অফ থাকায় তাঁদের খোঁজ পুলিশ এখনও পায়নি।
বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ এদিন রাতে বলেন, ‘দেহটি একজন মহিলার বলে শুধু জানা গিয়েছে। এর বাইরে কোনও তথ্য আমাদের হাতে এখনও আসেনি। ওই মহিলার পরিচয় জানার সবরকম চেষ্টা আমরা চালাচ্ছি।’ ময়নাতদন্তের যে প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে, তাতে অনেকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার বলে জানানো হয়েছে। তবে, কতদিন আগে তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি চিকিৎসকরা। ওই মহিলার ডান হাতের দু’টি আঙুল কাটা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। খুন করার পরে আঙুল কাটা হয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে জানতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। এদিন সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। বেশকিছু নমুনা তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করেছেন।
বাড়ির মালিক গোপাল পুরো ঘটনার কথা জানিয়ে বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মঙ্গলবার রাতে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই এলাকার বাসিন্দাদের থেকেও ভাড়াটে দম্পতির বিষয়ে বিশেষ কোনও তথ্য মেলেনি। কারণ, পাড়ার কারও সঙ্গেই তাঁরা খুব একটা মিশতেন না। যেহেতু বাড়ির মালিক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ২০২১ নাগাদ ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও বেশ কয়েক মাস ভাড়া মেটানো হচ্ছিল, তাই কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করা হতো–সেটা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।