BJP In West Bengal : মতুয়া-গোর্খা-রাজবংশী ভোট নিশ্চিত হবে কী ভাবে, চিন্তায় শাহ-নাড্ডারা – bjp has decided to develop a new strategy in bengal on how to get matua votes


অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি
নিশ্চিত করতে হবে মতুয়া ভোট৷ সঙ্গে রাজবংশী ও গোর্খাদের ভোট৷ সর্বোপরি সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে ভাগ বসাতেই হবে যে কোনও উপায়ে৷ ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বাংলায় ভালো ফল করার রেসিপি এটাই–এই মর্মে একমত বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ কিন্তু কী ভাবে পাওয়া যাবে এই বিপুল ভোট? বিশেষ করে যেখানে বাংলায় গত কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, মতুয়া ভোটব্যাঙ্কেই ভালোরকম থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গেও তুলনায় ভালো ফল করছে। পাঁচ বছর আগে ঠিক যে কেন্দ্রগুলোয় পদ্ম-ঝড় উঠেছিল, সেখানকার আসনই তো আর নিরাপদ নয়! সেই পথ তৈরির উদ্দেশ্যে এবার বিশেষ রণকৌশল তৈরির কাজ শুরু করেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব, যেখানে আগামী বছরের লোকসভা ভোটে বাংলায় অন্তত ২৫টি আসন পাওয়ার লক্ষ্যে মরিয়া চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ এই পরিকল্পনা তৈরির কাজে বিশেষ ভূমিকায় থাকছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ নিজে, নয়াদিল্লিতে দলীয় সূত্রের দাবি৷ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ শীর্ষ স্তরের সব নেতার সঙ্গে পরামর্শ করার পরেই তৈরি হচ্ছে রণকৌশলের খসড়া৷

বাংলার রণকৌশল তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের থেকে ইনপুট যেমন সংগ্রহ করা হচ্ছে, তেমনই মাথায় রাখা হচ্ছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দেওয়া তথ্যও৷ এর সঙ্গে যোগ হতে পারে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণের দায়িত্বে থাকা পেশাদার সমীক্ষক সংস্থার একাধিক পর্বে সমীক্ষার রিপোর্ট৷

তাত্‍পর্যপূর্ণ হলো, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই বাংলা থেকে ৩৫টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করে দিয়েছেন রাজ্য নেতাদের সামনে৷ এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সহজ হবে না, জানে বিজেপির শীর্ষ স্তর৷ এই ৩৫-এর মধ্যে বাংলায় অন্তত ২৫টি আসন নিশ্চিত বা সিকিওরড করতে হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা৷ সেই টার্গেট সামনে রেখেই তৈরি করা হচ্ছে রণকৌশল৷

বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এখন ব্যস্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়ে৷ কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সেয়ানে সেয়ানে টক্কর চলছে রাজস্থান, ছত্তিসগড়, মধ্যপ্রদেশে। এর মধ্যে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে বিজেপি যদি ভালো ফল করতে না পারে, তাহলে ২৪-এর ভোটে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য বলেই মনে করছেন দলের শীর্ষ স্তর৷ এর আগে চলতি বছরে হিমাচল প্রদেশ এবং কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছে দল৷ তারপরে তিনটি বড় রাজ্যের বিধানসভা ভোটে আশানুরূপ ফল না-হলে ২৪-এর আগে চাপ বাড়বে৷ ২০১৮-তেও তিনটি রাজ্যে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছিল।

Amit Shah : বিরোধী জোট শুধুই ‘ইলিউশন’! শাহের মন্তব্যের পাল্টা ‘ইন্ডিয়া’র
তার ক’মাস বাদে ২০১৯-এর লোকসভায় এই তিন রাজ্যেই কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করেছিল গেরুয়া ব্রিগেড। এবার তিন রাজ্যে খারাপ রেজাল্ট হলে ‘২৪-এ সেটা মেক-আপ করার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন শাহ-নাড্ডারাও। কারণ, এখনও বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ শিবির আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত রফা করতে না-পারলেও পাঁচ বছর আগের তুলনায় এবার তারা অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। তাই বাংলাতে ২৫টি আসনকে পাখির চোখ করে নামতে চাইছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই মর্মেই সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে মতুয়া, রাজবংশী, গোর্খা ও সংখ্যালঘু ভোটকে টার্গেট করে৷

Ration Corruption Issue : রেশন দুর্নীতি ইস্যুতে সুকান্তদের আন্দোলনে ঝাঁঝ নেই কেন? প্রশ্ন শাহ-নাড্ডাদের
যদিও সিএএ এখনও কার্যকর না-হওয়া অথবা গোর্খাল্যান্ডের দাবির সঙ্গে বিজেপির বঙ্গ-নেতারাই সহমত না-হওয়ায় উত্তরবঙ্গ বা মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় গেরুয়া শিবির আগের ভোটব্যাঙ্কই ধরে রাখতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে। বঙ্গ-বিজেপির এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, ‘শুধু লক্ষ্যমাত্রা স্থির করলে তো হবে না, আমরা চাইছি, এখন থেকেই বাংলায় ঝড় তুলুন মোদী-শাহ-নাড্ডারা, যাতে হাতেগরম দুর্নীতির ইস্যুগুলিকেই আমরা হাতিয়ার করতে পারি। আর সবার আগে দরকার, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দূর করা। না-হলে ৩৫ বা ২৫ কেন, দু’অঙ্কের টার্গেটও কঠিন হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *