কী বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়?
উত্তর ২৪ পরগনার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন সলেনা খাতুন। ২০১৮ সালে অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পরে ছেলে শেখ সাহিল মায়ের পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন। তা খারিজ করে দেয় জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল।
মায়ের মৃত্যুর সময় মামলকারী ছেলের বয়স ১৫ বছর ৭ মাস। তাঁর বয়স ১৮ বছর হলে মায়ের জায়গায় চাকরির আবেদন করেন। এর আগে বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলাকারীর আবেদন জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলকে বিবেচনা করে দেখার নির্দেশ দিয়ছিলেন। ছেলের আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। বিবেচনা করে এটিও খারিজ করা হয় বলে মামলাকারীর অভিযোগ।
নতুন করে আদালতে মামলা দায়ের করে সাহিল। বৃহস্পতিবার ওই মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আইভরি টাওয়ারে বসে বিচার করলে চলবে না। অনেক হয়েছে, আর না। গরিবের কথা একটু তো ভাবতে হবে।’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘দরিদ্রের চোখের জলের হিসেব কেউ নেয় না। এবার সময় এসে গিয়েছে হিসেব নেওয়ার।’ মৃত মায়ের চাকরি ছেলেকে না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘আইভরি টাওয়ারে বসে আর কত দিন বিচার চলবে? মা মারা গিয়েছে ওই সংসারের কী হবে? মায়ের চাকরি ছেলেকে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এমন চাকরি দেওয়ার নিয়ম তো রয়েছে। নিয়মের মধ্যে থেকে কেউ আবেদন করলে তাতেও কেন বাধা তৈরি করা হচ্ছে?’
এই মামলায় শিক্ষা দফকরের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক বলেন, ‘একই ধরনের অন্য একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছিল। ওই বেঞ্চ জানিয়েছিল, এভাবে কোনও কমপ্যাসনেট নিয়োগ করা যাবে না।’
বিচারপতির মন্তব্য বিভিন্ন সময়ে চর্চায়
বিভিন্ন সময়ে চর্চায় থেকেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক মন্তব্য। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘ঢাকি সমেত বিসর্জন’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি শোনা যায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে। তাঁর নির্দেশে একাধিক অযোগ্যরা চাকরি হারিয়েছেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে গোটা প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আজকে আদালতে বিচারপতির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে হাইকোর্ট।