Road Accident : জাতীয় সড়কে নিষিদ্ধ টোটোয় বলি ৪৩ – 43 people died in toto accidents on the national highway in purba bardhaman


রূপক মজুমদার, বর্ধমান
জাতীয় সড়কে টোটো ও ভ্যানোর মতো ধীর গতির গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জাতীয় সড়কে অবাধে চলছে টোটো, ভ্যানো। ২০২২-এর জানুয়ারি থেকে ২০২৩-এর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের গলসি, বর্ধমান, শক্তিগড়, মেমারি ও জামালপুর থানা এলাকার জাতীয় সড়ক ও দেওয়ানদিঘি, ভাতার, আউশগ্রাম থানা এলাকার ২-বি জাতীয় সড়কে টোটো দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। আহতর সংখ্যা ৩৭। এর মধ্যে একসঙ্গে একই পরিবারের চার বা পাঁচ জনেরও মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এর পরেও পদক্ষেপ করেনি জেলা প্রশাসন। বিক্ষিপ্ত ভাবে জেলা পুলিশ, পরিবহণ, পূর্ত দপ্তর কিছু পদক্ষেপ করলেও টোটো ও ভ্যানোর দৌরাত্ম্য এতটুকু কমেনি জাতীয় সড়কে।

২০২২-এর এপ্রিলের চার তারিখ বর্ধমান থানার ঝিঙুটি মোড়ের কাছে ২-বি জাতীয় সড়কে টোটো দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল মোট পাঁচ জনের। তার মধ্যে ছিলেন একই পরিবারের চার জন। তৎকালীন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল বন্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘সেন স্যারের নির্দেশ ছিল, জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল করলেই মোটা টাকার জরিমানা আদায় করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু, শাসকদলের চাপে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন পুলিশ সুপার।’

ডিভিসি মোড়ের পাল্লার বাসিন্দা অনুপ সাহা বলেন, ‘কতটা পথ পেরোলে তবে মানুষ হওয়া যায়— সেই গানের মতো কত মানুষ মরলে তবে টোটো বন্ধ করা যায়? প্রশ্নটা এখন তেমনই। সবাই দেখছে টোটো চলছে। সিমেন্ট, লোহার রড, পাথর নিয়ে ভ্যানো চলছে কিন্তু, কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ বড়নীলপুরের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় হাজারি বলেন, ‘আমরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় গেলে লাইসেন্স, দূষণ থেকে হাজারো কাগজ সঙ্গে রাখতে হয়। আর কালো ধোঁয়া ছেড়ে ভ্যানো পুলিশের সামনে দিয়ে চলে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’

জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজির কথায়, ‘আমরা কখনই চাই না দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাক। পরিবহণ সংক্রান্ত পরবর্তী মিটিংয়ে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব। দ্রুত গতির জাতীয় সড়কে ধীরগতির যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা এমভিআইকে বিষয়টি দেখার জন্য বলব।’ টোটো, ভ্যানো নিয়ে অভিযোগ উঠেছে রাজনৈতিক চাপের। সে প্রসঙ্গে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, ‘মানুষের জীবনের আগে কিছু নয়। তাই জাতীয় সড়কে টোটো বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে টোটোর জন্য অন্য রুটের ব্যবস্থা আলোচনার মাধ্যমে করা যেতেই পারে।’

Road Accident : ফের মৃত্যু জাতীয় সড়কে, আর কত প্রাণ যাবে? প্রশ্ন
বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকের বক্তব্যও এক। তিনি বলেন, ‘আমরাও চাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল বন্ধ করা হোক। প্রশাসন আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে আমরাও নিজেদের মতামত জানাব।’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, পুলিশ এক মুহূর্তে জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই সেটা হচ্ছে না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *