মাইকিং করে সামাজিক বয়কটের ডাক! মাঠেই পড়ে ফসল, বিপাকে গোটা পরিবার


অরূপ লাহা: দুই পরিবারের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিবাদ। পাড়ায় ঢোকার রাস্তা তৈরি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গোলমাল চলছিল। সেই বিবাদ এখন আদালতের বিচারাধীন। এর মধ্যেই স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ তাতে হস্তক্ষেপ করে একটি পরিবারকে রাস্তা তৈরি করতে দেওয়ার নিদানও দেয়। ওই পরিবারের লোকজন তা মানতে না চেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। আর তাতেই শাসকদলের লোকজন আরও রুষ্ট হয়ে ওঠে। অভিযোগ, শাসকদলের লোকজন ওই পরিবারকে সামাজিক বয়কটের ডাক দিয়েছে। এমনকি এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ ওই পরিবারকে কোন রকম সহযোগিতা না করে। এমনটাই অভিযোগ সেখ আজিজুলের।

আরও পড়ুন-শিউরে ওঠা ছবি! গ্রামে ঢুকতেই পারল না অ্যাম্বুল্যান্স, খাটিয়াতে শুইয়েই হাসপাতালের পথে রোগী

ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের মেমারি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের। ধান কাটার মরশুম চলছে। কোনও শ্রমিক ওই পরিবারের জমিতে কাজ করতে পারবেন না বলে ফতোয়াও দেওয়া হয়েছে শাসকদলের পক্ষ থেকে।  ফলে জমির ধান জমিতেই পড়ে রয়েছে। শ্রমিকরা ভয়ে কাজ করতে আসছে না বলে জানান সেখ আজিজুল। এমনকি এলাকার বাসিন্দাদের তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেও নিষেধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ।

সেখ আজিজুল বলেন, আমাদের জায়গার উপরে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছিল। আমরা তা মানতে চাইনি। সেই কারণে আমাদের উপর আগেও আক্রমণ করা হয়েছে। বিঘে চারেক জমি আছে। সেই জমির ধান পেকে গিয়েছে। কিন্তু কোনও শ্রমিক জমিতে ধান কাটতে যাচ্ছে না। কারণ স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর কাশ্মীরা খাতুন সেখ ও তার স্বামী সুরমান আলির নেতৃত্বে সেখ আজিজুলের পরিবারকে সামাজিক বয়কট করার ফরমান জারি করা হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা সেখ আজিজুলের ধানের জমিতে ধান কাটতে নিষেধ করেছে। ফলে তার মাঠের ধান মাঠেই পড়ে আছে।

এনিয়ে মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মানোয়ার হোসেন মণ্ডল বলেন, যা হয়েছে, তা খুবই অন্যায়। গোটা বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। মেমারি পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ীর সমর্থনেই এই কাজ হচ্ছে। মেমারি থানায় গেলে পুলিস বলছে আপনারা বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে ধান কাটার ব্যবস্থা করুন।

অন্যদিকে, সেখ আজিজুলের সঙ্গে যার বিবাদ সেই সেখ সবুর আলি বলেন, সামাজিক বয়কট করা হয়নি।এটা মিথ্যা অভিযোগ।

এরকম এক পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছেন সেলিমা বেগম ও সেখ আজিজুল হকের পরিবার। আজিজুল বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলায় নেতারা অকারণে মাথা ঘামাচ্ছে। যাদের জন্য রাস্তা তৈরি হচ্ছে তারা কাউন্সিলরের অনুগামী তাই কাউন্সিলর তার দলবল নিয়ে এসে ফতোয়া জারি করেছে। কাউন্সিলরের অনুগামীরা খুন করার হুমকি দিচ্ছে।

এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর দেখছি। সামাজিক বয়কট সত্য হলে দলকে বলব ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

জেলা পুলিস সুপার আমন দীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,খবর পেয়েছি। পুলিস বিষয়টি দেখছে।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *