কী জানা যাচ্ছে?
স্থানীয় সূত্রের খবর, মালদা জেলার বামনগোলার গোবিন্দপুর-মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালডাঙা থেকে আইগনতারা দীর্ঘ ৫ কিমি রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। ওই পথে যেতে চান না কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অতীতে চারবার রাস্তা অবরোধও করেছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু রাস্তার হাল ফেরেনি বলে অভিযোগ।
অসহায় পরিবার
স্থানীয় ২৪ বছরের এক গৃহবধূ মামণি রায় গত বুধবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন। শুক্রবার সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে যান পরিজনেরা। কিন্তু রাস্তা খারাপের কারণ দেখিয়ে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক হাসপাতালে যেতে চাননি বলে তাঁদের অভিযোগ। মৃতার স্বামী কার্তিক রায় বলেন, ‘ বুধবার স্ত্রীর জ্বর হয়েছিল। শুক্রবার তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ফোন করি। রাস্তা খারাপ বলে আসতে চায়নি।’ রাস্তা ভালো থাকলে আজকে এই ঘটনা ঘটতো না বলে দাবি তাঁর।
ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা
খাটিয়ায় রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবারের ওই ভিডিয়ো সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। তবে গ্রামে অ্যাম্বুল্যান্স না ঢোকা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী দিনে আরও মানুষের প্রাণ যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে কাঁধে করে মায়ের মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল ক্রান্তি ব্লকের নগরডাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা রামপ্রসাদ দেওয়ানকে। দিনমজুর বাবা-ছেলের কাছে অত টাকা না থাকায় মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ছেলে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জলপাইগুড়ির ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ যে বিশেষ কাজে আসেনি, মালদায় ঘটনায় তার প্রমাণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।