দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে অন্তঃসত্ত্বা হলেও তা টের পাননি কালনার দত্তদ্বারিয়াটনের বাসিন্দা বছর কুড়ির প্রিয়া ক্ষেত্রপাল। চিকিৎসকরা জানান, এমন ঘটনাকে ক্রিপটিক প্রেগন্যান্সি (গর্ভধারণের লক্ষণ প্রকাশ পায় না) বলে। এই ধরনের ঘটনায় প্রেগনেন্সির বিষয়টি জানা যায় একেবারে অন্তিম মুহূর্তে। তবে এমন ঘটনা বিরল নয় বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বছর ২০-র ওই বধূর দেড় বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
মার্বেলের কাজ করা স্বামী সুরজিৎ ক্ষেত্রপাল বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে স্ত্রীর জ্বর জ্বর ভাব ছিল। পরে তলপেটে ব্যথা শুরু হয়। রাতেই ওকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। আমি তো অবাক।’ রাত দুটো নাগাদ সিজার করে পুত্রসন্তান হয় প্রিয়ার। সুরজিৎ বলেন, ‘স্ত্রী তো বটেই আমরাও কেউ টের পাইনি স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সব কিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।’ প্রিয়া বলেন, ‘পেটটা সামান্য ফুলে ছিল। আমি তো আগেও সন্তানের জন্ম দিয়েছি কিন্তু, এবার বুঝতেই পারিনি আমি অন্তঃসত্ত্বা।’
কালনা মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ পীযূষকান্তি দাস বলেন, ‘পেট ফোলা দেখে প্রথমে ওই বধূর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানো হয়। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাতে সন্দেহ হয় কোনও গণ্ডগোল রয়েছে। ওই বধূকে গাইনোকোলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রসূতির ডপলার প্রেগন্যান্সি পরীক্ষায় ধরা পড়ে উনি গর্ভবতী। ভ্রূণের হৃদস্পন্দনও টের পাওয়া যায়। তখনও ওঁকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, উনি অন্তঃসত্ত্বা নন। নিয়মিত ঋতুচক্র হয় বলেও জানান।’ ততক্ষণে প্রিয়া ক্ষত্রপালের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়ে গিয়েছে। ইমারজেন্সি কিছু টেস্ট করেই ঝুঁকি নিয়ে সিজার করেন চিকিৎসকরা। নবজাতকের ওজন ২ কেজি ৯০০ গ্রাম। মা ও সন্তান দু’জনেই সুস্থ বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে।