এদিনের শুনানিতে রাজ্যের কৌঁসুলি সেই প্রসঙ্গ তুলতেই অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত প্রশ্ন তোলেন, ‘আগের দিন সবার সামনে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেছিলেন, আপনারা আলোচনা করে সমস্যা মেটান। তারপরেও আপনাদের লিখিত অর্ডার প্রয়োজন হয়?’ তাঁর সংযোজন, ‘পর্যবেক্ষণের কোনও গুরুত্ব নেই! তাহলে কি আমরা অর্ডার পাশ করব?’ রাজ্যপালের কৌঁসুলি তখন যুক্তি দেন, তিনি এই চিঠির বিষয়ে কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে তবেই এ বিষয়ে জানাতে পারবেন। বেঞ্চ আচার্য-রাজ্যপালের কৌঁসুলিকে বলে, কেন এই চিঠি দেওয়া হলো, তার উত্তর যেন দেওয়া হয়। আগামী ১ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিনও শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি দত্তের বেঞ্চ স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্য ও রাজ্যপাল–দু’পক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেয় যেন একসঙ্গে বসে আলোচনা করে একটি কমন ও কনসলিডেটেড তালিকা তৈরি করা হয়। ইতিমধ্যে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি গড়ার জন্য রাজ্য সরকার, ইউজিসি ও আচার্য-রাজ্যপালের তরফে বিশেষজ্ঞদের আলাদা তালিকা জমা পড়েছে। তার প্রেক্ষিতেই সম্মিলিত তালিকা তৈরির জন্য আলোচনায় বসার কথা বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। সেখান থেকেই চূড়ান্ত প্যানেল তৈরি করবে শীর্ষ আদালত।
এই প্রসঙ্গেই এদিন রাজ্যের কৌঁসুলি আদালতে জানান, শীর্ষ আদালতের পূর্ববর্তী পর্যবেক্ষণ মেনে মুখ্যমন্ত্রী গত ২ নভেম্বর আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু গত ৭ নভেম্বর রাজ্যপাল একটি চিঠি লিখে জানান, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে এমন কোনও বৈঠকের কথা বলা হয়নি। তখনই বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যপালের আইনজীবীকে। বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী ও আচার্যকে বৈঠকে বসার বিষয়টি প্রকাশ্য আদালতেই বলা হয়। রাজ্যপালের তরফে আইনজীবীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারপরেও কেন এমন চিঠি দিলেন আচার্য-রাজ্যপাল?’
এদিন আদালত নির্দেশ দেয়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ একসঙ্গে বসে একটি সম্মিলিত প্যানেলের তালিকা জমা দেবে। যদিও কতজনের প্যানেল হবে, প্যানেল কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে কোর্টই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আইনজীবীদের তরফেও প্যানেলের বিশেষজ্ঞদের যে নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছিল, সেটা গ্রাহ্য বা বাতিল হবে কি না, সে বিষয়েও সেদিনই সিদ্ধান্ত হতে পারে।