Jagaddal Incident : জেলের অপরাধীরাই চিন্তা বাড়িয়েছে কমিশনারেটের, বিক্কি যাদব খুনে নয়া সূত্র – jagaddal bikki yadav murder case police speculates that the entire gang may be in jail


এই সময়, জগদ্দল: সংশোধনাগার নাকি দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য! জগদ্দলে বিক্কি যাদব খুনে আবারও সেই প্রশ্ন সামনে চলে এল। কারণ বিক্কি খুনের গোটা ছকটাই জেলে বসে হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের একাংশের। বিক্কির ফোন কলের রেকর্ড খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বিক্কি নিজে এ নিয়ে পুলিশের কাছে অবশ্য কোনও অভিযোগে করেননি। কিন্তু বিক্কি ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, খুন হওয়ার কয়েক দিন আগে তাঁর কাছে জেল থেকে হুমকি ফোন এসেছিল। তবে শুধু জেল নয়, অন্যান্য সূত্রগুলি মাথায় রেখেও তদন্ত এগোচ্ছে পুলিশ। এ দিকে বিক্কি খুনের পর তিন দিন কেটে গেলেও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই ক্ষোভ গোপন করেননি।

এর আগেও জেলে বসে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে একাধিক অপরাধের ঘটনা ঘটিয়েছে দুষ্কৃতীরা। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের জেলে বসেই ফোনে তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। নোয়াপাড়ায় কয়েক মাস আগে রবীন দাস ওরফে ডন নামে একজনকে সুপারি কিলার দিয়ে খুনের চেষ্টাও হয়েছিল। প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর একটি কিডনি এবং হাতের একটি আঙুল বাদ যায়। জেলে বসে দাগি অপরাধীদের এমন একের পর অপারেশনে আতঙ্কিত ব্যারাকপুরের ব্যবসায়িক মহল পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়ার দ্বারস্থ হন। কমিশনার দমদম এবং ব্যারাকপুর, দুই সংশোধানাগার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। সূত্রের খবর, জেলের মধ্যে অপরাধীদের লাগাম টানতে দুই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে পুলিশ কমিশনার চিঠি লেখেন। সেইমতো জেল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগীও হন।

কিন্তু এ বার বিক্কি খুনের ক্ষেত্রেও যদি দেখা যায় জেলের অপরাধীরা নেপথ্যে, তবে তা পুলিশের কাছে চিন্তার বিষয়। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিক্কির ভাইপো আকাশ যাদব খুন হন। সেই খুনের মামলার একমাত্র সাক্ষী ছিলেন বিক্কি। বিক্কির ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে জেল থেকে হুমকি ফোন পেয়েছিলেন তিনি। তারপরই ভাড়াটে গুন্ডাদের বুলেট তাঁর শরীর ঝাঁঝরা করে দেয়।

প্রশ্ন উঠছে জেলের মধ্যে নজরদারি সত্ত্বেও দাগি অপরাধীরা কী ভাবে বাইরের দুনিয়ার অপরাধের মাস্টার মাইন্ড হয়ে উঠছে। তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত? স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘আমরা আগের বেশ কিছু মামলায় জেলবন্দি আসামিদের যোগসূত্র পেয়েছি। জগদ্দলের ক্ষেত্রে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’ তবে পুলিশ কমিশনারের কথায়, দুষ্কৃতীদের সশরীরে আদালতে হাজির না করিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি হলে জেলে বসে অপরাধের প্রবণতায় অনেকটাই রাশ টানা যাবে।

এ দিকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অপরাধ এবং অপরাধীদের লাগাম টানতে পুলিশ প্রচুর সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে। বিশেষ নজর রয়েছে জগদ্দল, ভাটপাড়ায়। বিক্কিকে খুনের পর অপরাধীদের বাইকে করে পালিয়ে যাওয়ার ছবিও ধরা পড়েছে সেই সিসি ক্যামেরায়। জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলন, ‘বিক্কি যাদব খুনে যে তিন দুষ্কৃতীর ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাদের মেঘনা লাইন দিয়ে বেরোতে দেখা গিয়েছে। এর আগেও ধারু সিং, মুনিল রজক, মহম্মদ রিজাউলকে খুনের পর দুষ্কৃতীরা মেঘনা লাইন দিয়েই পালিয়েছিল।’ কিন্তু ঘটনার তিন দিন পরেও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেন এখনও খুনের মাস্টারমাইন্ড বা সুপারি কিলারদের ধরতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার জগদ্দল পুরানিতলাবে যেখানে বিক্কি খুন হয়েছিলেন সেখান থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তলের গুলির খোল পুলিশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘কিছু ক্লু আমরা পেয়েছি। শীঘ্রই খুনের কিনারা হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *