Bharatiya Janata Party : ‘যোগ্য’দের টাকা মেটাতে মোদীকে চিঠি দেবেন সুকান্ত – sukanta majumdar will write to pm modi to pay the money to the worthy


এই সময়: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে এ বার উলটো পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল বঙ্গ-বিজেপি। এতদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের বকেয়া টাকা না মেটানোর পক্ষেই সওয়াল করতে দেখা যেত শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষদের। এবার বঙ্গ-বিজেপির নেতারাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে রাজ্যের বকেয়া মেটানোর আর্জি জানাতে চলেছেন।

কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে বৈধভাবে কাজ করেও রাজ্যের যে বাসিন্দারা প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না, তাঁদের টাকা মেটানোর অনুরোধ জানিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে-তৃণমূলের এই লাগাতার প্রচারের ধাক্কাতেই বঙ্গ-বিজেপির আচমকা অবস্থান বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তৃণমূলও মনে করছে, তাঁদের ঝাঁজালো আন্দোলনের ঠেলাতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। লোকসভা ভোটের আগে বঙ্গ-বিজেপির অবস্থান বদল নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভটাচার্যের মন্তব্য, ‘এতদিনে বোধোদয় হলো বিজেপির! রাজ্য সরকার যে তালিকা পাঠিয়েছে, সেখানে এমন একজনও নেই, যিনি প্রকল্পের আওতায় থাকার যোগ্য নন। এখন ঘুরিয়ে নাক দেখাচ্ছে বিজেপি!’

একশো দিনের কাজ, গ্রামীণ আবাস যোজনার মতো একাধিক প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। এমনকী কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরাও বাংলায় এসে এই ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন। যার জেরে এখনও একশো দিনের কাজের বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছে তৃণমূল।

গত মাসে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর অফিসের সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ইস্যুতে ধর্নাও হয়েছে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে ফের দিল্লি-যাত্রার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে তৃণমূলের আন্দোলন যে আরও জোরালো হতে চলেছে, তা বিলক্ষণ টের পেয়েছেন বিজেপি নেতারাও।

তাঁরাও পালটা হাতিয়ার করেছেন রাজ্যের শাসক দলের দুর্নীতিকে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তৃণমূলের সংগঠিত আন্দোলনের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না বিজেপির তোলা দুর্নীতির অভিযোগ। বরং বিজেপি গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে–এই প্রচারটাই বাংলার গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে ধারণা বঙ্গ-বিজেপিরও একাংশের। ফলে তাঁর এক ফোনে কেন্দ্র টাকা ছেড়ে দেবে বলে ক’দিন আগেও সুকান্ত মজুমদাররা বুক বাজিয়ে দাবি করলেও আপাতত সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

শুক্রবার বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি সেখানে বিধায়কদের নির্দেশ দেন, তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার আরও জোরালো করতে হবে। সূত্রের খবর, বৈঠকে হাজির হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার-সহ বেশ কয়েকজন সুকান্তকে জানান তাঁদের ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা। তাঁরা কোনও রাখঢাক না করেই বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে বলেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে তৃণমূল দুর্নীতি করেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

BJP In West Bengal : ২৯ তারিখ বিজেপির কর্মসূচি সফল করতে জেলায় জেলায় কর্মশালা
কিন্তু এমনও বহু মানুষ আছেন, যাঁরা বৈধভাবে একশো দিনের কাজ করে টাকা পাচ্ছেন না। তাঁদের সংখ্যাটাও কম নয়। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা আটকে দেওয়ায় ওই যোগ্য শ্রমিকদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে এক বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের সব টাকাই আটকে দিয়েছে। তাতে যাঁরা বৈধভাবে কাজ করেছেন, তাঁরাও হকের টাকা পাচ্ছেন না। স্বভাবতই তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। তৃণমূল সেই ক্ষোভকে যথার্থভাবে কাজেও লাগাচ্ছে। এটা আমাদের ভেবে দেখা উচিত।’

এর পরই দলীয় বিধায়কদের আশ্বস্ত করে সুকান্ত বলেন, ‘যাঁরা একশো দিনের প্রকল্পে বৈধভাবে কাজ করেছেন, তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্র ভিত্তিক তালিকা তৈরি করুন। তাঁদের টাকা যাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, তার আর্জি জানিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখব। একজন যোগ্য শ্রমিক বঞ্চিত হবেন না।’ বিধানসভায় এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যোগ্য ব্যক্তিদের টাকা আদায় করে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বের উদ্যোগের কথা যেমন প্রচার করা হবে, তেমনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তীব্রতর করা হবে।

BJP Rally in Kolkata : ধর্মতলায় BJP-র সভায় অনুমতি নেই পুলিশের, আদালতের দ্বারস্থ গেরুয়া শিবির
তার রেশ ধরেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিন দাবি করেছেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান মিড-ডে মিলে দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছেন। আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আরও জোরালো করতে ২৯ নভেম্বর ধর্মতলার মঞ্চে বিজেপি এমন অনেককে হাজির করানোর পরিকল্পনা করেছে, যাঁরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *