একাধিক শিবির বদল
পাহাড়ে সুবাস ঘিসিংয়ের হাত ধরে পথ চলা শুরু তাঁর। এরপর পাহাড়ে প্রভাবশালী বিমল গুরুংয়ের হাত ধরে তৈরি করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ে রাজনৈতিক আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গেই তিনিও কয়েক বছরের মধ্যেই ঘাসফুল শিবিরে পাড়ি দেন। গত বছর ডিসেম্বর মাসের পর তৃণমূলেও তাঁর মন টেকেনি। পরের ধাক্কা আসে সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত ভোটে। হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড সহ বিমল, বিনয়রা তৈরি করে ‘মহাজোট’। নির্বাচনে অনীত থাপা এবং তৃণমূলের জোটের সামনে টিকতে পারেনি এই মহাজোট। তখন থেকেই বিমল, অজয়দের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন বিনয় তামাং। শেষমেষ তাঁর হাতে উঠে এল কংগ্রেসের পতাকা।
কেন তিনি কংগ্রেসে?
বিনয় নিজেই জানান, তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁর হাত পা বাঁধা ছিল। তিনি দলে থেকেও কাজ করতে পারছিলেন না। অনেকটা ‘নিষ্ক্রিয়’ রয়ে গিয়েছিলেন দলে। কর্মচঞ্চল পাহাড়ি নেতার ‘বসে থাকাটা’ একেবারেই পছন্দ হয়নি। পাশাপাশি, বিজেপির বিরুদ্ধেও তাঁর বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘পাহাড়ে তিনবার বিজেপিকে জিতিয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপি কোনও কাজ করেনি। যা কাজ হয়েছে সব কংগ্রেসের আমলেই। তাই এবার কংগ্রেসে যোগদান করলাম।’
রবিবার কালিম্পঙের টাউন হলে কংগ্রেসের একটি যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ তথা রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেখানেই হাতে কংগ্রেসের পতাকা তুলে নেন তিনি। তবে বিভিন্ন দল ঘুরে এসেও তাঁকে যেন বসিয়ে রাখা না হয়। পাহাড়ের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে যেন কাজে লাগানো হয়, সেই অনুরোধ করেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর কাছে। কেন্দ্রে বিজেপিকে রুখতে এবার তাঁর কংগ্রেসই ভরসা বলে দাবি করেন তিনি।
কংগ্রেস কী বলছে?
অন্যদিকে, বিনয় তামাং-এর হাত শিবিরে যোগদান পর এক কংগ্রেস নেতা জানান, পাহাড়ের মানুষ বুঝেছেন আগামী দিনে তাঁদের দাবি ও অধিকার আদায়ের জন্য কংগ্রেসই একমাত্র পথ। গত কয়েক বছরে তাঁরা বিজেপি এবং তৃণমূলকে দায়িত্ব দিয়ে ঠকেছেন। সেই কারণে দীর্ঘদিনের নেতা বিনয় বুঝতে পেরেছেন এবার কংগ্রেস সামিল হওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। সেই কারণে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।