শনিবার একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন চিদম্বরম। গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে বক্তব্যে বিজেপির নাম না করেই গেরুয়া জমানায় গণতন্ত্র যে ভূলুণ্ঠিত–বার বার মনে করিয়ে দেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। নির্বাচনে টাকা ও ধর্মের বহুল ব্যবহার নিয়েও সরব হন। চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘আমাদের দেশে এখন গণতন্ত্রের ধাঁচাটুকুই রয়েছে। তার ভিতরে গণতন্ত্রের অংশমাত্র অবশিষ্ট নেই।’ এই প্রসঙ্গেই নির্বাচনে অর্থ ও ধর্মের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘নির্বাচনে এখন টাকা আর ধর্ম–এই দুটো ফ্যাক্টর কাজ করছে। টাকাই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
পাঁচ রাজ্যে চলতি বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘এই পর্বেই দেখুন, ১৭০০ কোটির বেশি কালো টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমার মনে আছে আমি প্রথম বার যখন নির্বাচনে লড়ি, তখন কেবল কিছু হ্যান্ডবিল, কয়েক হাজার পোস্টার আর একটা ট্রাক ভাড়া করা হয়েছিল। আর এখন এক একটা র্যালিতে চোখ ধাঁধানো শো হচ্ছে। কোটি টাকা খরচ। ভোটাররাও সব পার্টি থেকে টাকা নিচ্ছেন। টাকাই শেষ কথা বলছে।’ ধর্মের প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘আপাত ভাবে ভোটের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক থাকারই কথা নয়। কারণ ভোট হওয়া উচিত কাজের খতিয়ানের ভিত্তিতে। কিন্তু এখন ভোটের সঙ্গে ধর্মকে সরাসরি যুক্ত করা হচ্ছে। নইলে একটি দল একের পর এক নির্বাচনে একাধিক রাজ্যে কেবল হিন্দু প্রার্থীই দাঁড় করিয়ে চলেছে কী ভাবে?’
কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার নিয়েও সরব হন দুঁদে এই আইনজীবী। চিদম্বরমের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ার। কিন্তু বর্তমানে দেশে এমন পরিস্থিতি যে সব বিষয়ে যখন খুশি কেন্দ্রীয় এজেন্সি ঢুকে পড়ছে। তাঁর মতে, ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড, ওয়ান নেশন, ওয়ান ল্যাঙ্গোয়েজ, ইউনিফর্ম সিভিল কোড, এনআরসি-এ সবই গণতন্ত্র-বিরোধী পদক্ষেপ।’ নির্ভয়ে এবং সুবিধাহীন ভাবে ভোটাররা যতক্ষণ না ভোট দিতে পারছেন, ততক্ষণ বিপন্ন গণতন্ত্রকে রক্ষা করা যাবে না বলে মনে করেন তিনি।