Ayushman Bharat Digital Mission : রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকেরও ইউনিক আইডি তৈরি হবে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকায় ধন্দে ডাক্তাররা – a unique id will be created for the doctor along with the patient


এই সময়: আড়াই বছর আগে প্রতিটি দেশবাসীর ইউনিক হেলথ আইডি তৈরির পক্ষে সওয়াল করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাজেটে। সেইমতো কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক চালু করে ‘আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন’ (এবিডিএম)। শুরু হয় ‘আয়ুষ্মান ভারত হেলথ অ্যাকাউন্ট’ বা আভা (এবিএইচএ) আইডি তৈরির কাজও। এবার এই আইডি তৈরি হয়ে যাবে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাতে গেলেই। হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম (এইচএমআইএস) পোর্টালে আপলোড করা হবে এই আইডি-র তথ্যাবলি।

দেশের সব মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর ও ইন্ডোরে আসা রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও এই ইউনিক আইডি তৈরি করা বাধ্যতামূলক বলে শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষরা আতান্তরে, কর্মী নিয়োগ ছাড়া কী ভাবে সম্ভব অতিরিক্ত এই কাজ! শিক্ষক-চিকিৎসকদের মনেও প্রশ্ন, মেডিক্যাল কাউন্সিলের ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকার পরেও চিকিৎসকদের ফের একটি ইউনিক নম্বর তৈরির অর্থ কী!

কেন মেডিক্যাল কলেজগুলিকেই আভা আইডি তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, বহু মেডিক্যাল কলেজেই (মূলত বেসরকারিতে) শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাবের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল মেটেরিয়াল, অর্থাৎ রোগী ও তাঁদের রোগভোগ সংক্রান্ত তথ্যেরও অভাব রয়েছে। এনএমএসি-র বেঁধে দেওয়া মাপকাঠি ছুঁতে পারে না তারা। এতে ডাক্তারি পড়ুয়াদের পঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত তো হয়ই। উপরন্তু ওই সব কলেজ এই ঘাটতি মেটাতে প্রয়োজনমতো ভুয়ো নামে রোগীর আউটডোর টিকিট, এমনকী ভর্তি ও অপারেশনও দেখায় কাগজেকলমে, বাস্তবে যার আদতে কোনও অস্তিত্বই নেই। আভা আইডি তৈরি হয়ে গেলে, এই সমস্যার সমাধান হবে। শুধরোবে পঠনপাঠনের মান।

কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজের এক কর্তা জানান, আপাতত এনএমসি তিনটি বিষয়ে খুব জোর দিচ্ছে। প্রথমত, সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রতিটি কলেজে ন্যূনতম ২৫টি ক্যামেরা বসার কথা যার মাধ্যমে সেখানে সত্যিই রোগী আসছে কিনা, ছাত্রদের ক্লাস হচ্ছে কিনা, সেগুলো দেখে বোঝা যাবে। দ্বিতীয়ত, আধার-এনেবলড বায়োমেট্রিক হাজিরা। অনেক কলেজ নাকি অ-চিকিৎসক কর্মীদের আঙুলের ছাপ দিয়েও ডাক্তারদের নাম নথিভুক্ত করছে। তাই বায়োমেট্রিক হাজিরায় একদিকে যেমন আধারকে যুক্ত করা হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই মুখের বায়োমেট্রিকের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। আর তৃতীয়ত, আভা আইডি। যাতে হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফর্মেশন সিস্টেমের তথ্য এনএমসি-র ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডেও প্রতিফলিত হয় ‘রিয়েল-টাইম’ ভিত্তিতে।

এনএমসি-র দাবি, এতে একাধিক সুবিধা রয়েছে। একদিকে যেমন ভুয়ো শিক্ষক-চিকিৎসক ও ভুয়ো রোগীর ব্যাপারটি ধরা পড়ে যাবে। এবং এনএমসি-র ড্যাশবোর্ডে থাকা ক্লিনিক্যাল মেটেরিয়াল অন্য যে কোনও কলেজ কাজেও লাগাতে পারবে পঠনপাঠনে। অন্যদিকে তেমনই, মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনের কাজও এনএমসি-র কার্যালয়ে বসেই অনেকখানি সেরে নেওয়া যাবে ডিজিটাল মাধ্যমে। তবে শিক্ষক-চিকিৎসকরা বুঝতে পারছেন না, তাঁদের আভা আইডি তৈরির আসল উদ্দেশ্যটা কী!

কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষক-চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর আপলোড করে দিলেই তো কাজটা সারা হয়ে যায়। নতুন করে আভা আইডি তৈরি করে লাভ কী!’ তবে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষই জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ ছাড়া, রোগীদের আভা আইডি তৈরি করার কাজ শুরু করা অসম্ভব। স্বাস্থ্যভবন যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। এ বিষয়ে বেরোয়নি আদেশনামাও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *