Jamtara Gang : জামতাড়া গ্যাং-এর নয়া ফন্দি! টাকা হাতিয়ে সোনায় ইনভেস্ট – two members of fraud gang are caught after coming to buy gold with debit card in new barrackpore


এই সময়, নিউ ব্যারাকপুর: ডেবিট কার্ড দিয়ে সোনা কিনতে এসে নিউ ব্যারাকপুর পুলিশের জালে ধরা পড়ল প্রতারণা চক্রের দুই সদস্য। এদের সঙ্গে জামতাড়া গ্যাং-এর লিঙ্ক রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। চক্রের অন্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অনুজ কুমার সাউ ওরফে শর্মা এবং সুনীল পাটোয়া। দু’জনেই আদতে বিহারের হলেও কলকাতার ট্যাংরা এবং মানিকতলার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাগুইআটির সাধনা আবাসনে ভাড়া থাকছিলেন।

এর আগে কসবা, আনন্দপুর, হরিদেবপুর অঞ্চলেও ভাড়া থাকতেন তাঁরা। অভিযুক্তদের জেরা করে বাগুইআটির একটি ফ্ল্যাট ছাড়াও মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লি, বাগুইআটির ভিআইপি পার্ক-সহ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় একাধিক মোবাইল ফোন, ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড, প্যান, আধার, সিম কার্ড, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, চোখ স্ক্যানারের যন্ত্র ছাড়াও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি স্কুটিও। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সাল থেকে সক্রিয় এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রতারকরা বিভিন্ন পরিচিতদের নামে জাল প্যান কার্ড তৈরি করে গ্রামীণ এলাকায় বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলত। সেখানে নিয়ম মেনে বেশ কিছু টাকা জমা রাখা হতো। সেই টাকার যোগান দিত জামতাড়া গ্যাং-এর সদস্যরা। আবেদনের ভিত্তিতে নিয়ম মেনে ব্যাঙ্ক থেকে ক্রেডিট কার্ড পেয়ে যেত প্রতারকরা। সেই কার্ড নিয়েই লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হতো। এদের মূল টার্গেট ছিল সোনার দোকান। সেখান থেকে গয়না কিনে টাকা মেটানোর সময় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতো। এরপর সেই সোনা ব্যাঙ্কে মর্টগেজ দিয়ে সেখান থেকে লোন নিয়ে তা আর পরিশোধ করতো না। কখনও আবার সোনার দোকান ছাড়াও মার্বেলের দোকান থেকে বিল নিয়ে ওই বিলের মোট মূল্যের ১০ শতাংশ দোকানদারকে দিয়ে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা ক্যাশ করেও টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো।

মাস খানেক আগে নিউ ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছে নামকরা একটি সোনার দোকানে ৩৮ হাজার টাকা সোনা কেনে এই প্রতারকরা। ক্রেডিট কার্ডে বিলও মেটায়। তবে লোন পরিশোধ না করায় জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তির ডেবিট কার্ড জালিয়াতি করে ওই কার্ড দিয়ে টাকা পেমেন্ট করা হয়। পরে সেই টাকা ক্যাশে কনভার্ট করে নেয় প্রতারকরা। গত ১৪ অক্টোবর ফের একই কায়দায় ডেবিট কার্ড দিয়ে ওই একই সোনার দোকানে গয়না কিনতে এলে সন্দেহ হয় দোকান মালিকের। তিনি পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে প্রতারকরা চম্পট দেন। বিষয়টি জানানো হয় নিউ ব্যারাকপুর থানায়। তদন্তে নেমে ওই পুলিশ সিসিটিভি এবং মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ওই রাতেই বাগুইআটির ফ্ল্যাট থেকে অনুজ ও সুনীলকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার হদিশ পাওয়া গিয়েছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, সাধারণ মানুষের অজান্তেই তাঁদের নামে অন্য ঠিকানায় প্যান, আধার কার্ড বানিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার পরে ডেবিট কার্ডের সুবিধা নিয়ে টাকা হাতানোর পাশাপাশি এরা বিভিন্ন কৌশলে পরিচিতদের ডেবিট কার্ড হাতিয়েও টাকা তুলতে পারদর্শী ছিল। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক কল সেন্টারের সাথে সংযোগ রক্ষা করে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করত এরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *