জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রডের বদলে বাঁশের বাতা দিয়ে ঢালাই করে আইসিডিএস কেন্দ্রের সোকপিট ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা ঠিকাদারের। গ্রামবাসীদের নজরে আসতেই শোরগোল। চুরি ও কাটমানির তত্ব বিরোধীদের।
গ্রাম পঞ্চায়েতের এস্টিমেটে রীতিমত রড দিয়ে ঢালাই করে সোকপিটের ঢাকনা তৈরীর কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে এস্টিমেটের রড গায়েব। গ্রামবাসীরা দেখেন রাতারাতি বাঁশের বাতা দিয়ে ঢালাই করে সোকপিট ঢাকা দিচ্ছে ঠিকাদার। বিষয়টি নজরে আসতেই শুরু হয় শোরগোল। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে খবর দিতেই পঞ্চায়েত ওই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ঘটনা বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের সাগরমেজে গ্রামের। বিরোধীদের দাবী সর্বক্ষেত্রে যে কাটমানি আর চুরি চলছে এই ঘটনা তারই আরেকটি উদাহরণ।
আরও পড়ুন: Asansol Shootout: উত্তপ্ত আসানসোল! টোটো পার্কিংকে কেন্দ্র করে গুলি দোকান মালিককে
সম্প্রতি স্বচ্ছ ভারত মিশন গ্রামীণ প্রকল্পে বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৭০টি টিউবয়েলের পাশে ঢাকা দেওয়া সোকপিট তৈরীর উদ্যোগ নেয় লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রতিটি সোকপিটের জন্য বরাদ্দ হয় ২৫ হাজার টাকা। এস্টিমেট অনুযায়ী টিউবয়েলের পাশে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পাঁচ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে গর্তের চারিদিক দশ ইঞ্চির গাঁথনি করার কথা। সোকপিটের উপরের অংশে রড ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ঢাকনা করার কথাও রয়েছে এস্টিমেটে।
সেপ্টেম্বর মাসে লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত টেন্ডার করে বেশ কিছু সোকপিট তৈরীর জন্য ঠিকাদারদের বরাত দেয়। টেন্ডারে স্থানীয় নারায়ণ চক্রবর্তী নামের এক ঠিকাদার ৮টি সোকপিট তৈরীর বরাত পান। তার মধ্যে একটি হল সাগরমেজে গ্রামের আইসিডিএস এর টিউবওয়েল সংলগ্ন সোকপিট।
ওই সোকপিট তৈরীর কাজ শুরু হয়। কাজ শেষে সোকপিটের ঢাকনা তৈরীর সময় গ্রামবাসীরা দেখেন ঢাকনার ঢালাই এ রড ব্যবহারের পরিবর্তে বাঁশের বাতা ব্যবহার করা হচ্ছে। রাতারাতি সেই বাঁশের বাতার উপর ঢালাই এর কাজও করা হচ্ছে। এই ঘটনায় রীতিমত অবাক স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ আটকে খবর দেয় লেগো গ্রাম পঞ্চায়েতে।
আরও পড়ুন: LIVE: সাতসকালে পাটুলিতে তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে সিবিআই
খবর পেতেই গ্রামে গিয়ে ওই সোকপিট তৈরীর কাজ আটকে দেন লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। বাঁশ দিয়ে ঢালাই করা ঢাকনার অংশও ভেঙে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় বিডিওকেও।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবী আইসিডিএস কেন্দ্রে প্রতিদিন গ্রামের ছোট ছোট শিশুরা খেলা ও লেখাপড়া করে। যেভাবে এই সোকপিটের কাজ করা হচ্ছিল তাতে যেকোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদের দাবী এই রাজ্যে সর্বস্তরে চুরি, দুর্নীতি আর কাটমানির রাজত্ব চলছে। এই ঘটনা সেই চুরি, দুর্নীতি আর কাটমানিরই ফলাফল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)