হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক নিজে আদালতে হাজির থেকে মামলা করলেও সরকারি কৌঁসুলিদের হাজিরা যে কম ছিল, মানছেন তিনিও। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘এখানে সরকারি বা সাধারণ মামলাকারীর আইনজীবী–এই ভাবে দেখা ঠিক নয়, আসলে রাস্তায় যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কায় অনেক আইনজীবীই আসতে দ্বিধা করেছেন।’ তিনি স্বীকার করেন, আগের থেকে কমে গেলেও ছুটির প্রবণতা থেকে হাইকোর্ট এখনও বেরোতে পারেনি।
প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের মতো শহরে বড় কোনও সভা বা রাস্তায় সমস্যার আশঙ্কা থাকলে আগের দিনই বার অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেয় যে, সব পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকলে কোনও নির্দেশ যেন না দেওয়া হয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু বুধবার বেলা প্রায় পৌনে বারোটা পর্যন্ত বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা হাইকোর্টে হাজির ছিলেন। তাঁরা মামলায় অংশও নেন। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে বহু মামলাতেই অনুপস্থিত ছিলেন সরকারি প্যানেলভুক্ত আইনজীবীরা। আবার কিছু ক্ষেত্রে মামলাকারী বা তৃতীয় পক্ষের আইনজীবীদেরও দেখা যায়নি।
তরুণ আইনজীবী সূর্যনীল দাস বলেন, ‘আমার একটি মামলায় প্রথমে সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন না, তবে পরে তিনি উপস্থিত হওয়ায় মামলাটি হয়। যদিও বহু মামলার শুনানি হয়নি শুধু সরকারি কৌঁসুলির অনুপস্থিতিতে।’ আইনজীবী শামিম আহমেদের মতে, ‘এ দিন সাধারণ আইনজীবীর সংখ্যাও কম ছিল। তবে সরকারি আইনজীবীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো কম। অনেক মামলা আটকে গিয়েছে শুধু সরকারি আইনজীবীর গরহাজিরায়।’
বর্ষীয়ান এক আইনজীবী বলেন, ‘শাসকদলের সভায় যে হাল হয় হাইকোর্টের, সেই ছুটির আমেজই এ দিন দেখা গিয়েছে আদালতে। এর আগে বিচারপতির এজলাসের সামনে এক পক্ষ বয়কট করলে, অন্য পক্ষকে ঠেলে ভিতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। একদলের মিছিলের পাল্টা মিছিলও হয়েছে। কিন্তু সুযোগ পেলে ছুটি ভোগের প্রবণতা যে বজায় রয়েছে, তা অস্বীকার করা যাবে না।’ এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ হাইকোর্টে উপস্থিত বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা মিছিল করে ধর্মতলায় অমিত শাহের সভায় যান।