কলকাতার মতোই সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গাতেও পার্কিং ঘিরে রোজই নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কোথাও অতিরিক্ত টাকা চাওয়া হচ্ছে, আবার পার্কিং লট নয় এমন জায়গাতেও গাড়ি রাখলে টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সল্টলেকে সরকারি হিসেবে ১৩টি পার্কিং লট রয়েছে। তবে সেগুলি কোন জায়গায়, তার কোনও তালিকা বিধাননগর পুরনিগম বা বিধাননগর কমিশনারেটের ওয়েবসাইটেই দেওয়া নেই। যে সংস্থা পার্কিং লটের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের কর্মীরা নির্দিষ্ট কোনও পোশাক পরে থাকেন না।
ফলে আরও বেশি সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে, বক্তব্য সল্টলেকের বাসিন্দা ও বাইরে থেকে রোজ উপনগরীতে আসা মানুষজনের। পরিস্থি্তি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বিধাননগর পুরনিগমে আরটিআই পিটিশন করে জানতে চেয়েছেন, সল্টলেকের কোন কোন অঞ্চলে অনুমোদিত পার্কিং লট আছে, তা জানানো হোক। নইলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
কয়েকদিন আগে সল্টলেকের আইবি ব্লকের একটি শপিং মলে কিছু জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন পুরনিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলার অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। মঞ্জুষার সামনে গাড়ি রাখতেই কালো জামা ও কালো ট্রাউজার পরা এক যুবক তাঁর কাছে পার্কিংয়ের একটি চিরকুট ধরিয়ে দেয়। ওই যুবকের কাছে পার্কিংয়ের বৈধ কাগজ দেখতে চান অনিন্দ্য।
তাঁকে কাউন্সিলারের অফিসে যাওয়ার কথা বলেন অনিন্দ্য। তখনই সে পালিয়ে যায়। তবে শুধু অনিন্দ্যই নন। সল্টলেকের প্রাক্তন কাউন্সিলার স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। অনিন্দ্য এবং স্বাতী দুজনেরই বক্তব্য, সল্টলেকের রাস্তায় কোথায় পার্কিং আছে তা প্রকাশ্যে জানানো উচিত বিধাননগর পুরনিগমের। না হলে এই ঝামেলা থেকে নিস্তার মিলবে না।
সল্টলেকের বাসিন্দা সংগঠনের (বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) সদস্য কুমারশঙ্কর সাঁধুর অভিযোগ, ‘কোনটা পার্কিং লট আর কোনটা নয়, তা নিয়ে আমরা অন্ধকারে। সেই সুযোগেই নিয়মের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে অনেকে।’ বিজেপি নেতা অনুপম ঘোষের অভিযোগ, ‘বৈধ পার্কিং লটের বাইরে একাধিক বেআইনি পার্কিং বানিয়ে ফেলা হয়েছে সল্টলেকে। একটা চক্র লাভবান হচ্ছে। কোনগুলি পার্কিং লট তার তালিকা গুরুত্বপূর্ণ মোড়, ওয়েবসাইটে জানাক প্রশাসন।’
যে এলাকায় পার্কিং নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন অনিন্দ্য, সেখানকার কাউন্সিলর রঞ্জন পোদ্দার বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে যাঁরা পার্কিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের গোলাপি রঙের ইউনিফর্ম আছে। আমার কাছে পার্কিং সংক্রান্ত কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। এলে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব।’ যদিও ওয়ার্ডভিত্তিক আলাদা ইউনিফর্ম সাধারণ মানুষের বোধগম্য হবে কী করে, তার সদুত্তর মেলেনি। এ দিকে বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘পার্কিং লটে যে কাগজ দেওয়া হয়, তার থেকে অতিরিক্ত টাকা দেবেন না। কেউ চাইলে আমাদের জানান।’