পুলিশ সেজে কিডন্যাপ, শেষে ট্র্যাপে – criminals are arrested by police on charges of attempted kidnapping in filmy style in bardhaman


এই সময়, বর্ধমান: ফিল্মি কায়দায় চেষ্টা হয়েছিল অপহরণের। কাজও সারা হয়েছিল কিন্তু, দুষ্কর্ম ভেস্তে গেল কাঁচা চিত্রনাট্যের কারণে। অপহরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিন দুষ্কৃতীর ঠাঁই হলো শ্রীঘরে। ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ। বর্ধমানের বাসিন্দা রাজু সাঁই নামে এক গৃহশিক্ষক ছোটনীলপুরের কাছে টিউশন পড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই দু’টি মোটর বাইকে চার জন তাঁকে জিটি রোডের ধারে একটি ক্লাবের কাছে দাঁড় করায়। নিজেদের আরপিএফ কর্মী পরিচয় দিয়ে রাজুকে জোর করে তাদের মোটর বাইকে তুলে নেয়।

কালনা রেল গেটের কাছে একটি ছোট আন্ডারপাসের সামনে রাজুর সন্দেহ হলে তিনি চিৎকার করে ওঠেন। মোটর বাইকে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। সেই ধস্তাধস্তিতে মোটর বাইক থেকে পড়ে যায় রাজু সহ তিন আরোহী। এর পর রাজুকে বেধড়ক মারধর করে ফের মোটর বাইকে তুলে নেওয়া হয়। এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা কৌতূহল দেখালে দুষ্কৃতীরা তাঁদেরও নিজেদের আরপিএফ কর্মী বলে পরিচয় দেয়।

বর্ধমানের সোলাপুকুরের একটি মসজিদের পিছনে রেলের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয় রাজুকে। সেখানে তাঁকে মারধর করে সাত লক্ষ টাকা মুক্তিপণের জন্য চাপ দেয় অপহরণকারীরা। বর্ধমানে পূজা রজকদাস নামে এক বান্ধবীর সঙ্গে থাকতেন রাজু। অপহরণকারীরা পূজাকে ফোন করে টাকা জোগাড়ের নির্দেশ দেয়। যদিও দেরি না করে ওই মহিলা পুরো ঘটনা জানান বর্ধমান থানায়।

এর পর থানার সাব-ইনস্পেক্টর সঞ্জয় মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে অপহরণকারীদের এলাকা চিহ্নিত করে। অপহরণকারীদের সঙ্গে নিরন্তর কথা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ ওই মহিলাকে জানায়। তাতে মোবাইল টাওয়ারে অপহরণকারীদের এলাকা সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হয় পুলিশ। সাদা পোশাকে পুলিশ সেই এলাকা ঘিরে ফেলে।

এদিকে অপহরণকারীরা পূজাকে জানায়, রেলের জলট্যাঙ্কির একটি জায়গায় আপাতত সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে আসতে হবে। তখন অন্ধকার নেমে এসেছে। পূজা টাকা নিয়ে জলট্যাঙ্কিতে এলে সেখানে অপহরণকারীদের দু’জন চলে আসে। তখনই সাদা পোশাকের পুলিশ বমাল ধরে ফেলে দু’জনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে কোয়ার্টার থেকে আরও এক জনকে ধরা হয়। এক জন পালিয়ে যায়। সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রাজুকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মুকুল চন্দ (৩৮), সাবির আলম (৩১) ও জামির শেখের (৩৭) নামে অতীতে বহু অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। পূজা রজকদাস বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ যে ভাবে রাজুকে উদ্ধার করেছে তাতে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।’ জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘অভিযোগ আসা মাত্র পুলিশ দ্রুত অপহরণকারীদের ধরার প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। পলাতক ব্যক্তিরও খোঁজ করছে পুলিশ।’ বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে পেশ করে পুলিশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *