কী জানা গেল?
মঙ্গলবার রাত্রি ৯টা ৪৮ মিনিট থেকে ৪৯ মিনিটের মধ্যে মৃদু ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঝাড়গ্রাম। ভূমিকম্পের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভব করেছে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লক ও বেলপাহাড়ি ব্লকের মানুষজন। মূলত, পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড সহ পুরো এলাকাটি ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত। ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় প্রচুর খনিজ সম্পদ থাকার কারণে এবং প্রতিনিয়ত খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য এখানে মাঝে মধ্যে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণে ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকাকে মৃদু ভূমিকম্পস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা রয়েছে।
স্থানীয়রা কী বলছেন?
জামবনি ব্লকের বেড়াগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুমন ভকত বলেন, ‘বাড়ির মেঝেতে বসে টিভি দেখছিলাম। আমাদের এডবেস্টারের বাড়ি পুরো কেঁপে উঠল। প্রায় এক মিনিটের বেশি সময় ধরে আমরা ভূমিকম্প অনুভব করেছি। মনে হচ্ছিল ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে ভূমিকম্পটি এসে শিলদার দিকে চলে গেল।’ ঝাড়গ্রাম শহরে এই ভূমিকম্প ৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অনুভব করেছেন অনেকেই। ঝাড়গ্রাম শহরের কদমকানন এলাকার বাসিন্দা কাপগাড়ি সেবা ভারতী মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের হেড অফ দা ডিপার্টমেন্ট ডঃ প্রণব সাহু বলেন, ‘রাত্রি ৯টা ৪৮ মিনিট থেকে ৪৯ মিনিটের মধ্যে ভূমিকম্প অনুভব করা যায়। ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা জলের বোতল এবং শরবত ভর্তি গ্লাস কেঁপে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে হালকা কম্পন দিয়ে পুরো বাড়িও কাঁপতে থাকে।’
ভূগোলের অধ্যাপক ডঃ প্রণব সাহু জানান, ছোটনাগপুর মালভূমিল তলদেশে ভূ-গঠনিক প্রক্রিয়া মাঝে মধ্যেই চলতে থাকে এবং সেই সঙ্গে ছোটনাগপুর মালভূমির খনিজ সম্পদ উত্তোলনের ফলে ভূতাত্ত্বিক ভারসাম্যতা অসমতার সৃষ্টি হয়। তখনই এই ধরণের মৃদু ভূমিকম্পে হওয়ায় সম্ভাবনা থাকে। যদি ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় তাহলে এই ভূমিকম্পের মান রিখটার স্কেলে ৩ থেকে ৪ পর্যন্ত হতে পারে। যদিও ভূমিকম্পের জেরে ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গিয়েছে।