পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমির কিছু অংশ লিজ নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা চাষ করেন। অভিযোগ, সোমবার রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা জমির ফসল নষ্ট করে পালিয়েছে। কোনও জমি থেকে ফসল উপড়ে ফেলা হয়েছে, কোথাও আবার ফসল কেটে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন ধরেই জমিতে জল দেওয়ার পাম্প মেশিনের মতো একাধিক কৃষি সরঞ্জাম চুরি গিয়েছে। অভিযোগ, ইদানীং চুরির ঘটনা যেমন বেড়েছে, তেমনই বাড়ির ইলেকট্রিক মিটার, বাথরুম, দরজা-জানালা ভাঙার মতো ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আগেই এলাকার বাসিন্দারা রহড়া থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু দুষ্কৃতীদের উৎপাত বন্ধ হওয়া দূরে থাক, সোমবার ফসলই নষ্ট করে দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি চাষিদের নজরে আসতেই তাঁরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে রহড়া থানার পুলিশ এলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ডাঙাপাড়া কৃষক কল্যাণ সমিতির সদস্য ধনরাজ রাম বলেন, ‘রাত হলেই এলাকায় বাড়ছে বহিরাগতদের আনাগোনা। নেশার আড্ডাখানা হয়ে গিয়েছে ডাঙাপাড়া। গত সপ্তাহে চুরির পর এ দিন ফসল নষ্ট করে দিল দুষ্কৃতীরা। পুদিনা গাছ উপড়ে ফেলে দিয়েছে৷ পেঁয়াজ গাছের পাতা উপর থেকে কেটে দিয়েছে। পুলিশ কিছু করছে না বলেই দুষ্কৃতীরা এত সাহস পাচ্ছে।’ এক চাষি বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে ফসল ফলিয়েছি। যদি এভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয় তা হলে পেট চালাব কী ভাবে?’ চাষিদের কথায় এলাকায় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত এতটাই হয়েছে, যে কিছুদিন আগে কারও একটা জন্মদিনের সেলিব্রেশন শূন্যে গুলিও চলে।
উল্লেখ্য, এই চাষের জমিরই একটি অংশে ভুয়ো কাগজ বের করা নিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রোমোটার চক্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন টিটাগড়ের পুরপ্রধান কমলেশ সাউ। বেআইনি ভাবে জমি বিক্রির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে পুরপ্রধান এলাকা পরিদর্শন করেন এবং প্রতারকদের ফাঁদে পা না দেওয়ার আবেদন জানান। কমলেশ সাউ বলেন, ‘ওই জমি টিটাগড় পুরসভার নামেই রয়েছে। পুরসভা কাউকে কোনও জমি বিক্রি করেনি।’ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানান তিনি। কমলেশ সাউ আরও বলেন, ‘চাষিদের চাষ করার জন্য পুরসভার জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। আমরা চাষিদের পক্ষে রয়েছি। জমি যাতে দখল না হয় এবং কারা ফসল নষ্ট করছে তা পুলিশকে খুঁজে বের করতে বলেছি।’ রহড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।