স্বাস্থ্যভবনের অভ্যন্তরীন রিপোর্ট বলছে, গত ২৯ নভেম্বর রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল ৯৮ হাজারে। আর ডিসেম্বরের ৪ তারিখেই সংখ্যাটা এক লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে বলে খবর। গড়ে এখনও রোজ হাজারখানেক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ স্পষ্ট, আগের চেয়ে প্রকোপ কমলেও ডিসেম্বরে ডেঙ্গি পরিস্থিতির ঠিক যতটা উন্নতি হওয়া উচিত ছিল, প্রত্যাশিত সেই অবস্থায় এখনও পৌঁছায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য তাপমাত্রাই দায়ী। কেননা, তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে না নামা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার বংশবৃদ্ধি। আর সেই তাপমাত্রা এখনও আসেনি বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ আর ঘূর্ণিঝড়ের জেরে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের জনস্বাস্থ্য শাখার এক আধিকারিক বলেন, ‘মিগজাউম তো আজ (মঙ্গলবার) অন্ধ্র উপকুলে আছড়ে পড়লো। ঘূর্ণিঝড়ের সেই প্রভাব সরাসরি হয়তো বাংলা পড়বে না। কিন্তু এই মিগজাউমের জন্যই ডেঙ্গি পরিস্থিতির প্রত্যাশিত উন্নতি নিয়ে এই ডিসেম্বরেও আমরা সংশয়ী।’ কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, একদিকে যেমন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ব্যাপারটা আটকে গিয়েছে। অন্যদিকে তেমনই আবার ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে জল জমে যাওয়ার মতো বৃষ্টি হলে, সেই কারণে বেড়ে যাবে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি।
সে জন্যই শীত পড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ আগের চেয়ে বেশ কিছুটা কমলেও, ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ এখনও রয়েই গিয়েছে স্বাস্থ্যভবনের অন্দরমহলে। লক্ষাধিক আক্রান্তের মধ্যে শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গের ১৬টি জেলাতেই (স্বাস্থ্যজেলা-সহ) ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। সংক্রমণের প্রকোপ মূলত কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলিতেই বেশি।
এর মধ্যে পলা নম্বরে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে চলতি বছরে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ হাজার ৮১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পরেই রয়েছে কলকাতা, যেখানে ১ জানুয়ারি থেকে এ যাবৎ আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৪১ জন। আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুর্শিদাবাদ (১১ হাজার ৭২১)। এর পরে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে হুগলি (৭ হাজার ৮৩৪), নদিয়া (৬ হাজার ৪৩৪) ও হাওড়া (৫ হাজার ৮১১)। আর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৫০ জন।