অন্যদিকে, এ দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁরা শারীরিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে সঠিক চিকিৎসার আবেদন জানান। অর্পিতার আইনজীবী জেল হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে শহরের অন্য যে কোনও হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার আবেদন করেন। বিচারক জেল কর্তৃপক্ষকে এসএসকেএম হাসপাতালে অর্পিতার চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
এদিন শুনানির সময়ে হাত জোড় করে মানিক ভট্টাচার্য বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘স্যার, আমার কিছু বলার আছে। গত বছর ১০ অক্টোবর রাত ১২টা নাগাদ আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমার কিছু ব্যক্তিগত জিনিস নিয়ে নিয়েছেন ইডি অফিসারেরা। সেগুলি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’ বিচারক জানতে চান, ‘কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল?’ মানিক উত্তর দেন, ‘ইডি অফিস থেকে। বহুবার সেগুলি ফেরত দিতে বলেছি। ওরা বারবার বলছেন, দিয়ে দেবেন। কিন্তু পাচ্ছি না। পিপি-কেও বলেছিলাম।’
এর পরেই কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করে বিচারক বলেন, ‘তা হলে আমাকে আবার বলছেন কেন? নির্দিষ্ট ফোরামে জানান।’ আবেদন করলে, নির্দেশ দেবেন বলেও জানিয়ে দেন বিচারক। এ বিষয়ে ইডি-র আইনজীবী বলেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় নিয়ম মেনে মানিকের কাছে থাকা সামগ্রী নেওয়া হয়েছিল। সেগুলি ‘সেফ কাস্টডি’তে রয়েছে। যেহেতু মানিক জেল হেফাজতে রয়েছেন, তাই তিনি আবেদন করলে সেগুলি দেওয়া যাবে না। প্রতিবারই মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য ওগুলি লিখিতভাবে ফেরত পেতে আবেদন করেননি।’
এর পর ধৃত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী দাবি করেন, ‘আমার মক্কেলের চিকিৎসার প্রয়োজন। যে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আপত্তি নেই। কমান্ড হাসপাতাল হলেও হতে পারে।’ বিচারক অর্পিতার আবেদন খারিজ করে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে জেল কর্তৃপক্ষের এক অফিসারকে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা যেন দ্রুত হয়, তা সুনিশ্চিত করুন। আপনাদের উদ্যোগ নিয়ে যেন কোনও সন্দেহের অবকাশ না থাকে। এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য পাঠান ওঁকে। আমাদের রাজ্যে বেস্ট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এদিন অভিযুক্ত পাঁচ জনের পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন জানানো হয়নি। বিচারক তাঁদের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে আলিপুর আদালতে তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি দাস, কৌশিক ঘোষ সহ বেশ কয়েকজনকে আদালতে পেশ করে সিবিআই। বিচারক আজ, বুধবার সেই মামলাটি শুনবেন।