মঙ্গলবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সলমন খান, অনিল কাপুরদের মতো বিশিষ্ট অতিথিদের সম্মানে কয়েকবার নাচের ছন্দে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে এদিন দিল্লিতে গিরিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘গোটা বাংলা দুর্নীতিতে জর্জরিত। গরিব মানুষ তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ মুখ্যমন্ত্রী সলমনের সঙ্গে নাচছেন! এটা তাঁর শোভা পায় না।’ গিরিরাজের বক্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মমতা অবশ্য এই সমালোচনা গ্রাহ্যই করেননি। বাগডোগরা বিমানবন্দরে বুধবার বিকেলে মমতা বলেন, ‘আমি নাচ জানি না। আদিবাসীদের নাচে যোগ দিই ওদের সাহায্য করার জন্য। এখানে (ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল) তেমন কিছু হয়নি। অনিল কাপুর আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। একবার পা মিলিয়েছি, তার বেশি কিছু নয়। বলিউডের এই শিল্পীদের আমরা সম্মান করি। সবার সঙ্গে মিলতে হয়।’
দিল্লি ও কলকাতায় গেরুয়া শিবিরের কটাক্ষের পাল্টা তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টচার্য, শান্তনু সেন, মহুয়া মৈত্রের মতো তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদরা। শান্তনু বলেন, ‘দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে এমন ভাষায় আক্রমণ করার সাহস কী করে পান গিরিরাজ? এ নিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ ভিডিয়ো বার্তায় মহুয়া বলেন, ‘এমন কদর্য ভাষা ও মানসিকতা নারীবিদ্বেষী মনোভাবের প্রতীক। বাংলার মহিলারা এর জবাব দেবেন।’ আজ, বৃহস্পতিবার সংসদ চত্বরে তৃণমূলে মহিলা সাংসদরা এনিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।
গিরিরাজের মন্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যে না আনলেও একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ থাকায় তৃণমূলনেত্রী মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। রাজ্যের প্রাপ্য অর্থের দাবিতে দিল্লিতে মমতা আন্দোলন করার কথা আগেই ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি তিনবার দেখা করেছি। ফের আমরা তাঁর সময় চেয়েছি সাক্ষাতের জন্য। ওই সময়ে আমাদের দিল্লি চলো কর্মসূচি রয়েছে। এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আমরা ওদের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এদিন আবার দিল্লিতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গিরিরাজকে নিশানা করেন। মমতাকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি গিরিরাজ অস্বীকার করায় তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা বলেন, ‘গিরিরাজজির দোষ দেখছি না। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর এই প্রস্তাবে কোনও অন্যায় ছিল না। হতে পারে দলগত কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন তিনি। কেন গিরিরাজ তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলছেন, তা নিয়ে রাজ্যের কোনও বিজেপি নেতা হয়তো নালিশ ঠুকেছেন! তবে সেদিন তাঁর সঙ্গে দু’দফায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।’
এরইমধ্যে উত্তরপ্রদেশে বিপুল ভুয়ো জবকার্ড পাওয়ার বিষয়টি সামনে চলে আসায় মমতা এদিন বলেছেন, ‘উত্তরপ্রদেশে সব থেকে বেশি ভুয়ো জব কার্ড পাওয়া গিয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক কোনও পদক্ষেপ করেছেন? ওদের তো অনেক টাকা দিয়েছে। আমাদের একশো দিনের টাকা কেন বন্ধ রেখেছে?’