Visva Bharati University : ব্রাত্য ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিতর্ক সরিয়ে নতুন ফলক বসল বিশ্বভারতীতে – the world heritage plaque in visva bharati university is dismantled and the new plaque is installed


এই সময়, শান্তিনিকেতন: ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ফলকে ব্রাত্য ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই বিতর্কিত ফলক দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। সেই নির্দেশের দুই সপ্তাহের বেশি অতিক্রান্ত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসল বিশ্বভারতী। স্বীকৃতি প্রাপ্তির ফলক অবশেষে ভেঙে ফেলা হলো শান্তিনিকেতনে। লাগানো হলো নতুন ফলক৷ তাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম সমেত শান্তিনিকেতনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায়৷

বিতর্কিত ফলক বদলের নির্দেশ আগেই এসে পৌছেছিল বিশ্বভারতীতে। নতুন ফলকের কী বয়ান হবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে। কিন্তু ফলক সরছিল না। ‘এই সময়’-এর খবরের জেরে নড়েচড়ে বসলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বুধবার সন্ধ্যাবেলায় আচমকা অভিযানে নেমে শান্তিনিকেতনের তিনটি ঐতিহ্যবাহী স্থান উপাসনাগৃহ, রবীন্দ্রভবন ও গৌরপ্রাঙ্গণে থাকা বিতর্কিত ফলকগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাতেই বসানো হয়েছে নতুন ফলক৷

তাতে লেখা রয়েছে, ‘বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণার্থে শান্তিনিকেতন বিশ্ব ঐতিহ্যে সারণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই সারণিতে অন্তর্ভুক্তি শান্তিনিকেতনের বিশ্বজনীন সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্ব সুনিশ্চিত করে এবং বিশ্ব মানবতার স্বার্থে এটির সুরক্ষা আবশ্যক।’ এরপরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম-সহ শান্তিনিকেতনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া রয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে লেখা হয়েছে নতুন ফলক৷

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী পুরোনো ফলক সরিয়ে নতুন ফলক বসানো হল।’ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, পড়ুয়া থেকে শুরু করে আশ্রমিক, প্রাক্তনীরা।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কো বিশ্বকবির শান্তিনিকেতনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তকমা দিয়েছে। সেই সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য ছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি তিনটি শ্বেত পাথরের ফলক বসিয়েছিলেন। সেই ফলকে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী ও উপাচার্য হিসাবে নিজের নাম দিয়েছিলেন৷ অথচ, ব্রাত্য ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়৷ রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, পড়ুয়া, প্রাক্তনীরা প্রতিবাদে পথে নামেন৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সরব হন এর বিরুদ্ধে।

এমনকী, এই ফলকগুলি বেআইনি ভাবে বসানো হয়েছে বলে ৪ নভেম্বর শান্তিনিকেতন থানায় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার। বিতর্কের মাঝেই ৮ নভেম্বর উপাচার্য হিসাবে মেয়াদ শেষ হয় বিদ্যুৎবাবুর৷ নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়েছেন সঞ্জয়কুমার মল্লিক।

তারপরেই গত ১৪ নভেম্বর ফলক নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এই নির্দেশ বিশ্বভারতীতে এসে পৌঁছয়। চিঠিতে ফলক বদলের নির্দেশের পাশাপাশি ফলকে বয়ান কী হবে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। ইংরাজী ও হিন্দিতে বয়ান তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাতেও সেই বয়ান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে।

কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তার পরেও বিতর্কিত ফলক সরানোর কোনও উদ্যোগ নেয়নি বিশ্বভারতী। ‘এই সময়’ সংবাদপত্রে সেই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। অবশেষে নির্দেশ পাওয়ার কুড়ি দিন পর ফলক ভাঙলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বসল নতুন ফলক।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *