জেলায় জেলায় বৃষ্টি
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জন্য তৈরি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিতে ভিজল রাজ্যের একাধিক জেলা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। বুধবার থেকে আকাশের মুখ ভার ছিল। কালো মেঘে ঢেকেছিল আকাশ। রাত থেকেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। ভোর থেকে বাড়তে থাকে বর্ষণের প্রকোপ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত, বসিরহাট, বনগাঁ, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর সর্বত্রই এদিন বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে একটানা বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা। রাস্তায় অফিসযাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। অধিকাংশ জায়গাতেই অবিরাম ঝিরিঝির বৃষ্টি চলছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও একই ছবি। সকাল থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন অংশ বৃষ্টিতে ভিজেছে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বইছে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকায় প্রভাব পড়েছে ফেরি পরিষেবায়। স্বাভাবিক তুলনায় কিছুটা হলেও দেরিতে চলছে ফেরি পরিষেবা। অসময়ে বৃষ্টির জেরে সমস্যার মুখে পড়েছেন কৃষকরাও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা, সাগর, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবারসহ একাধিক এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কৃষকজীবীদের ব্যস্ততা চোখে পড়েছে। মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের ব্যস্ততা চোখে পড়েছে।
মিগজাউমের প্রভাবে বৃষ্টিতে ভিজেছে উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। বুধবার রাত থেকে জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণ নেই। দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণির মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে মাঝে মাঝে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মাঠে থাকা ধানের কারণে চিন্তায় রয়েছেন এই জেলার চাষিরা।
মিগজাউমের দাপটে বৃ্ষ্টি হচ্ছে জঙ্গলমহলেও। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলাতেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার রাত থেকে বাঁকুড়াতে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। গত ২৪ ঘন্টায় এই জেলায় ৪৫.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ১৬. ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
ভিজছে কলকাতাও
অন্যদিকে বুধবার সন্ধে থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। বৃহস্পতিবার রাতেও অব্যাহত জলধারা। কোথাও হালকা বা কোথাও মাঝারি, অকাল বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতার অধিকাংশ এলাকায়। বৃষ্টির কারণে কলকাতায় যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করছে। কোনও কোনও রাস্তা দেখা গিয়েছে যানজটও।
কী বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞ?
কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘১২-১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আপাতত এতে চাষে সেভাবে ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে যদি বৃষ্টিপাত ২০-২৫ মিলিমিটার হয় তাহলে ধানের পাশাপাশি আলু সরষে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে। জমিতে কোনওভাবে জল দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না।’ বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর জমিতে ছত্রাক নাশক ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি দফতরের ওই আধিকারিক।