জিএসটি বিল পেশের সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের কাছে ছ’টি প্রশ্ন পাঠান রাজ্যপাল বোস। সেই প্রশ্নমালায় বাংলায় ক্যাসিনো রয়েছে কি না, ক্যাসিনো হবে কি না, এই দুই প্রশ্নও ছিল। অনলাইন গেমিং, ক্যাসিনো, ঘোড়ার রেসের উপর জিএসটি-র সংশোধিত হার বলবৎ করতেই বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ড) বিল- ২০২৩’ পেশ করা হয়।
জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে ক্যাসিনো, ঘোড়ার রেস, অনলাইন গেমের উপরে ২৮ শতাংশ জিএসটি লাগু করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। জিএসটি কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রের ক্যাবিনেট এই মর্মে জিএসটি বিধির (রুলস) সংশোধনীর বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কেন্দ্র এ বিষয়ে জিএসটি বিধি সংশোধনীর বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর প্রতিটি রাজ্যে জিএসটি আইনে এই সংক্রান্ত সংশোধনী করা আবশ্যিক হয়ে পড়ে। সেই লক্ষ্যে রাজ্য অর্থ দপ্তর জিএসটি সংশোধনী বিল তৈরি করে রাজভবনে পাঠায়।
এই বিলের উপরে বিতর্কে এ দিন বিজেপির বিধায়ক, অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ি প্রশ্ন করেন, ‘জিএসটি কাউন্সিল অনেক দিন আগে সুপারিশ করলেও রাজ্য সরকার কেন এত দিন এই সংশোধনী বিল পেশ করেনি? বিধানসভায় বিল পেশ করতে যে বিলম্ব হলো, তার জন্য রাজ্যের কত রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে?’ অশোকের এ প্রশ্নের উত্তরেই চন্দ্রিমা বলেন, ‘রাজভবনে এই বিল পড়ে থাকার জন্যই বিধানসভায় বিল পেশ করতে দেরি হয়েছে। রাজ্যপাল বিল পেশের সম্মতি না দিয়ে পাঁচ-ছ’টি প্রশ্ন পাঠান। তিনি জানতে চান, রাজ্যে কোনও ক্যাসিনো রয়েছে কি না? কোনও ক্যাসিনো হচ্ছে কি না?’
যদিও পশ্চিমবঙ্গে কোনও কালে কোনও ক্যাসিনো ছিল না। দেশের মধ্যে গোয়ার মতো হাতেগোনা কয়েকটি রাজ্যে ক্যাসিনো রয়েছে। সে কারণে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে ক্যাসিনোয় জিএসটির হার বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ করা নিয়ে গোয়া, দিল্লি আপত্তি তুলেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য অনলাইন গেম, ক্যাসিনো, ঘোড়ার রেসের উপরে করের হার বৃদ্ধি করার পক্ষে প্রবল সওয়াল করে।
রাজভবন থেকে ক্যাসিনো নিয়ে আসা প্রশ্ন ‘হাস্যকর’ বলে বক্তব্য তৃণমূলের পরিষদীয় দলের একাধিক সদস্যের। বিধানসভায় এ দিন সংশোধনী জিএসটি বিলে অনলাইন গেমিং, অনলাইন মানিগেমিং, ভার্চুয়াল ডিজিটাল অ্যাসেটের সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বিদেশে থেকে কেউ যদি রাজ্যে অনলাইন গেমিং চালান তাহলে সেই ব্যক্তির রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন থেকে রাজ্যে ক্যাসিনো, অনলাইন গেমিং, ঘোড়ার রেসে জিএসটি ২৮ শতাংশ হওয়ায় কত রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন অশোক। যদিও চন্দ্রিমা তা স্পষ্ট করেননি।