তারপর বিদ্যাসাগর প্রেক্ষাগৃহে সমাবর্তনের সূচনা করেন। কিছু পড়ুয়ার হাতে তুলে দেন শংসাপত্রও। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও আচার্য হিসেবে তিনি নিজে ভাষণ দেওয়ার পরে অমলেন্দুর উপরে সমাবর্তন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন। যদিও শিক্ষাকর্মী ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশ এ দিন রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখায়। ওঠে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগানও।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘কে কোথায় যাবেন বা যাবেন না, সেটা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। বুধবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধের কথা নোটিস করে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের থেকে চিঠি যাওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে কোনও সমাবর্তন বা কোর্ট মিটিং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় করবে না। ফলে কারা পতাকা দেখিয়েছে, কেন দেখিয়েছে, আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’ যদিও রাজ্যপাল ক্যাম্পাস ছেড়ে বেরনোর সময়ে বলেন, ‘আচার্য আচার্যের কাজ করছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ইস্যু নিয়ে কোনও সংঘাত নেই।’
রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা কাটাতে সোমবারই রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছিল। ঘণ্টাখানেকের বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কথাবার্তা যে ভাবে এগিয়েছে, তাতে কোনও বিতর্ক হওয়ার কথা নয়, কনক্লুশনেরও কথা নয়। আমি মনে করি, সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে সেইমতো নিজেদের মধ্যে কথা বলে আলোচনায় বসার থেকে ভালো উপায় আর কিছু নেই।’ কিন্তু তার পরেও রাজ্যপাল উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নিষেধ উপেক্ষা করে কল্যাণীতে যাওয়ায় সেই আলোচনা কতটা গুরুত্ব পেল, সে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষামহলের একাংশে।
সমাবর্তন স্থগিত নিয়ে বুধবার রাতে রেজিস্ট্রার যে নোটিস জারি করেছিলেন, সে প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী উপাচার্য এ দিন বলেন, ‘ওই নোটিসে আমার সম্মতি ছিল না। কোর্ট মিটিং উপাচার্যের কোনও বিষয় নয়। বুধবার রাতে বাড়ি গিয়ে ৯টা ৪০ নাগাদ নদিয়ার জেলাশাসকের ই-মেল পাই যাতে লেখা ছিল, রাজ্যপাল-আচার্য বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে আসছেন। আমি রাত সাড়ে দশটা নাগাদ রাজভবনে যোগাযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি কথা জানাই। কিন্তু আমাকে বলা হয়, রাজ্যপাল যে এ দিন ক্যাম্পাসে আসছেন, তা যেন প্রত্যেক কোর্ট মেম্বার ও বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়ে দিই।’
রেজিস্ট্রারের বিজ্ঞপ্তিতে ‘স্থগিত’ সমাবর্তন কী করে হলো? রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়ের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিং ও সমাবর্তন দুটোই স্থগিত করার যে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি তিনি দিয়েছিলেন, তা উপাচার্যের অনুমতিক্রমেই। রাজ্য সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে এ দিন কল্যাণীতে কোর্ট মিটিং ও সমাবর্তনের পরে প্রশ্ন উঠেছে, যাদবপুরে ইসি এবং সমাবর্তন ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট বৈঠক কি এবার হবে? তা হলে যাদবপুরে বাজেট ও কলকাতায় স্নাতকের পরীক্ষাবিধি সংক্রান্ত সমস্যা মিটতে পারে।