শীতে বিয়ের মরশুম। বিয়ে অনুষ্ঠানের আগে হিন্দু রীতি মেনে পাত্র পাত্রী কে খাওয়ানো হয় আইবুড়ো ভাত। মূলত পাত্র পাত্রীর আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন বাড়ি কিংবা অধুনা কোনও রেস্তরাঁয়। তবে ট্রেনে আইবুড়ো ভাত! এরকমই একটি অভিনব দৃশ্যের সাক্ষী থাকল তারকেশ্বর- হাওড়া ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা।
প্রতিদিন ট্রেনে চড়ে তারকেশ্বর থেকে হাওড়া যান অনেকেই। হাওড়া স্টেশনে নেমে যে যাঁর মতো চলে যান নিজ নিজ গন্তব্যে। আবার দিনের শেষে হাওড়া থেকে একইভাবে বাড়ি ফেরা। রোজকার জীবনে নিত্য আসা-যাওয়ার পথে এমন অনেক মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়। ধীরে ধীরে বন্ধুত্বও গড়ে ওঠে। একসময়কার অচেনা মানুষগুলোই এই নিত্য যাওয়া আসার মাঝে পরিবার হয়ে ওঠে।
এরমকমই নিত্য ট্রেনে যাতায়াতের সূত্রে বাহিরখন্ডের অতনু শাসমলের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ট্রেনের পিন্টু,সজ্ঞয়,মিলন,রাজু,নির্মল, গোবিন্দ,মানিক সহ বেশ কিছু যাত্রীদের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর অতনু বিয়ে করতে চলেছেন হরিপাল নিবাসী উর্মিলাকে।
আর এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেও রীতিমতো উৎসাহ প্রকাশ করেন তাঁর ট্রেনের বন্ধুরাও। শুধু তাই নয়, অতনুর জন্য বিশেষ কিছু করার পরিকল্পনাও করতে শুরু করেন তাঁরা। সেই মোতাবেক শনিবার সকাল ৯:৩২ডাউন তারকেশ্বর -হাওড়া লোকালের ভেন্ডার কামরার ফুলের মালা বেলুন দিয়ে সাজিয়ে হবু বরকে ধুতি পাঞ্জাবি পরিয়ে ১৯ পদ দিয়ে খাওয়ানো হল আইবুড়োভাত।
অতনুর পাতে পড়েছে ভাত, ভাজা, মাছ, মাংস, দই , মিষ্টি। সবমিলিয়ে ছিল একেবারে এলাহি আয়োজন। অতনু জানান, সহযাত্রীদের থেকে এই ধরনের সারপ্রাইজ পেয়ে আপ্লুত তিনি। যাঁরা আইবুড়োভাত তাঁর জন্য আয়োজন করেছেন তাঁদের অনেককেই তিনি আগে চিনতেন না। ট্রেনে নিত্যদিন আসা যাওয়ার সুবাদে তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব। সেই মানুষগুলোই এত আপন হয়ে উঠবে তা ভাবতে পারেননি তিনি। জানান, বিয়েতে প্রত্যেককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নিজের জীবনের অন্যতম বড় পরীক্ষায় সফরসঙ্গী হওয়া মানুষগুলো পাশে থাকুক, চাইছেন অতনু।